তমলুক: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুহুর্মুহু শাসক-বিরোধী টক্কর দেখছে পশ্চিমবঙ্গ। একদিকে বিজেপি তো অন্যদিকে তৃণমূল, নিত্য দ্বন্দ্ব চলছেই। এহেন উত্তপ্ত রাজনৈতিক আবহেই সম্প্রতি পালিত হয়ে গেল জঙ্গলমহলের ‘নেতাই দিবস’। আর সেই অনুষ্ঠানের পর শুভেন্দুর সভা ঘিরে প্রশ্নের মুখে ছত্রধর মাহাতো৷
পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব এখন লালগড়ের নেতা ছত্রধর মাহাতোর উপর। গত ৭ জানুয়ারি নেতাই দিবস উপলক্ষ্যে সেখানেই বিনা বাধায় সভা করেছেন শাসকদল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। নেতাই থেকেও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন তিনি। নেতাইয়ে শুভেন্দু অধিকারীর এই সভা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে শাসক দলের অন্দরে। আর সেই সূত্রেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে ছত্রধর মাহাতোর নেতৃত্ব। তাঁর ডেরাতে সাত সকালে বিনা বাধায় কীভাবে সভা করতে পারলেন শুভেন্দু অধিকারী, তা নিয়ে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। সূত্রের খবর, শুভেন্দুকে ঠেকাতে না পারার বিষয়ে দলীয় নেতৃত্বের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন জঙ্গলমহলের জেলা সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো।
ছত্রধর মাহাতোর এলাকায় বিনা বাধায় শুভেন্দু অধিকারীর প্রবেশের অন্য তাৎপর্যও নির্ণয় করেছেন কেউ কেউ। তাঁদের মতে এক্ষেত্রে অন্য সমীকরণের সম্ভাবনাটিও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ দলবদলের যে কালো মেঘ ভোটের আগে দেখা দিয়েছে শাসক শিবিরের আকাশে, জঙ্গলমহলেও তার প্রকোপ পড়তে পারে বলে সন্দেহ করেছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ। নিজেদের এই সন্দেহের পিছনে কারণও দেখিয়েছেন কেউ কেউ। তাঁদের মতে দিন কয়েক আগেই একটি মামলায় ছত্রধর মাহাতোকে তলব করেছিল এনআইএ, আর তারপরেই নেতাইয়ের মতো জায়গায় বিনা বাধায় ঢুকেছেন শুভেন্দু অধিকারী। দুইয়ে দুইয়ে চার করেছেন অনেকেই।
উল্লেখ্য, নেতাই দিবসে শুভেন্দু অধিকারীকে তাঁর এলাকায় ঢুকতে বাধা দেবেন বলে আগেই দলকে আশ্বস্ত করেছিলেন ছত্রধর মাহাতো। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় ৮ তারিখ সকাল সাড়ে আটটা নাগাদই অন্তত ২০০ বিজেপির কর্মীর বাইক র্যালির সঙ্গে নেতাইয়ে প্রবেশ করেন শুভেন্দু অধিকারী। এমনকি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে নেতাইয়ের শহিদ বেদী থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগানও দেন তিনি। সব মিলিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সভার পর জঙ্গলমহলের নেতা ছত্রধর মাহাতোর আচরণ নিয়ে উঠেছে গেছে একাধিক প্রশ্ন।