এগরাঃ ১৪ বছরে রামচন্দ্রের বনবাস শেষ হয়। কিন্তু ১৪ বছরে মানস ভুইঞাঁকে নিশানা করার ছবিটা যেন বদলায় না। তিনি যেন টার্গেট হয়েই আসছেন। ১৪ বছর আগে ২০০৯ সালে মঙ্গলকোটে মানস ভুইঞাঁকে ধান ক্ষেত দিয়ে ছোটানো হয়। তখন তিনি ছিলেন কংগ্রেসে। ফাল্গুনি মুখোপাধ্যায় হত্যার ঘটনায় তখন মঙ্গলকোট উত্তাল। মঙ্গলকোট পরিদর্শনে গিয়ে চরম হেনস্থার মুখে পড়তে হয়ে মানস ভুইঞাঁ সহ কংগ্রেসের তিন প্রতিনিধিকে। তাঁদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় সিপিএম কর্মীরা বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে ধান ক্ষেত ধরে ছুটতে থাকেন মানস ভুইঞাঁ। যে দৃশ্য সেই সময় সংবাদ মাধ্যমগুলিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। ২০০৯ সালের মঙ্গলকোটের এক টুকরো ছবি তেইশের এগরায়। বাজি করখানা বিস্ফোরণে একাধিক মৃত্যু। পরিদর্শনে সেই মানস ভুইঞাঁ। যিনি এখন তৃণমূল কংগ্রেসে। তিনি রাজ্যের মন্ত্রীও। তাতে আর কী বা এসে গেল। নিশানায় সেই তিনিই।
১৪ বছর আগে তিনি ধান ক্ষেতে ছুটেছিলেন, ১৪ বছর পর চোর শ্লোগান তাঁকে ঘিরে। বিক্ষোভের জেরে আটকে পড়লেন মানস। তাঁকে ঘিরে শ্লোগান উঠল- চোর চোর। মানস ভুইঞাঁ যেন সেই তিমিরেই ফিরে এলেন, ১৪ বছর আগে যে তিমিরে ছিলেন। অদ্ভুত সেই মিল। আজও মানসের চোখে মুখে সেই হেনস্থার ছাপ স্পষ্ট, যা ছিল মঙ্গলকোটে। মঙ্গলকোট যেন ফিরে এল এগরাতে।
তাঁর রাজনৈতিক পরিভাষা বদলেছে। তিনি কংগ্রেস ছেড়েছেন, তৃণমূলে এসেছেন। তিনি মঞ্চে উঠে মমতার ছবি না দেখে বলে ওঠেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছবিই নেই অনুষ্ঠানে? সেই মানস ভুইঞাঁ এগরার বিস্ফোরণকাণ্ড নিয়েও বলে ওঠেন বাজির কারখানা মালিক এর আগেও অনেকবার জেল খেটেছে, জামিন পেয়েছে। এখানে তৃণমূলের দোষ কোথায়।
এবার সেই মানসই যখন জনমানসে এলেন তাঁর বিরুদ্ধে উঠল শ্লোগান। এগরার মানুষ মানস ভুইঞাঁকে নিতে পারলেন না। প্রতিবাদী হলেন। ফাড়াকটা থাকল। ২০০৯ সালে মানস ভুইঞাঁ হেনস্থার মুখে পড়েন সিপিএম কর্মীদের দ্বারা। ২০২৩ সালে সাধারণ মানুষ ঘিরে ধরল মানসকে, জবাব চাইল বিস্ফোরণের, শ্লোগানে- চোর। ১৪ বছর পরও মানস ভুইঞাঁ যেন নিশানার কেন্দ্রে।