কলকাতা: এনপিআরের পর এবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প নিয়ে সমীক্ষার কাজেও নারাজ রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের নির্দেশ মত বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ করা হবেনা বলে নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে।ফলে আগামী আর্থিক বছরে ওই সব প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের বিপুল সংখ্যক গরিব মানুষ ওই সব প্রকল্পের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলে তার দায় রাজ্য সরকারের ওপরেই বর্তাবে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব রাজেশ আস্থানা রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি দিয়ে, আইসিডিএস, অঙ্গনওয়াড়ি,প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা , ইন্দ্র্ধনুষ , জাতীয় সামাজিক সহায়তা প্রকল্প (এনএসএপি)র মত কেন্দ্রীয় গ্রামীন প্রকল্পে সুবিধা প্রাপকদের বিস্তারিত তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছেন।এই সব প্রকল্পে শিশু ও মা’র পুষ্টির জন্য পুষ্টিকর খাবার দেওয়া , বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা , বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য ভাতা প্রদান করা হয়।
এইসব প্রকল্পে মানুষ কিভাবে উপকৃত হচ্ছেন বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার মাধ্যমে তা জানতে বলা হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর এই সমীক্ষা নিয়ে বেঁকে বসেছে রাজ্য সরকার। মুখ্য সচিবের কাজ থেকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের ওই চিঠি পঞ্চায়েত সচিবের কাছে পাঠানো হলেও সমীক্ষার কাজ করা হবে না বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।সি এ এ, এন আর সি ও এন পি আর নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে এই সমীক্ষা না করার সিদ্ধান্ত বলে নবান্নের কর্তাদের দাবি।
তাদের বক্তব্য জাতীয় নাগরিক পঞ্জী এবং নেশনাল পপুলেশন রেজিস্টার এর পক্ষে বিপক্ষে আন্দোলন ও প্রচারের জেরে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রকম বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে ।এই অবস্থায় নতুন করে কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে সমীক্ষা করতে গেলে গ্রামের মানুষ ভুল বুঝতে পারেন।তাই এসব থেকে বিরত থাকাই সংগত বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। তবে এক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরে এইসব কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে রাজ্যের মানুষ বঞ্চিত হতে পারেন বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কারণ ওই সমীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করবে কেন্দ্র ।এই সব প্রকল্পেই কেন্দ্র ৬০ শতাংশ টাকা দেয়। আর বাকি ৪০ শতাংশ টাকা যোগা য় রাজ্য সরকার।এই রাজ্যে কত সংখ্যক মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে ন এবং সুবিধা পাচ্ছেন তা জানতে না পারলে প্রকল্প পরিচালনার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ সাহায্য বন্ধ করলে এই সব প্রকল্পের আওতায় থাকা গ্রামীণ দরিদ্র সম্প্রদায়ের অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।