নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নানা প্রান্তে চলল সিবিআই তল্লাশি! এর শেষ কোথায়?

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নানা প্রান্তে চলল সিবিআই তল্লাশি! এর শেষ কোথায়?

কলকাতা:  বছর গড়িয়ে পরের বছরের মাঝামাঝি সময় প্রায় চলে এসেছে। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে  জড়িতদের সন্ধানে কেন্দ্রীয়  তদন্তকারী সংস্থার তল্লাশি অভিযান অব্যাহত। বৃহস্পতিবার কলকাতা ও সংলগ্ন নানা স্থানে সকাল থেকেই তল্লাশি অভিযানে নামে সিবিআই। বৃহস্পতিবার ঠিক কি কি ঘটেছে তা একনজরে দেখে নেওয়া যাক। সিবিআই আধিকারিকরা অভিযান চালিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রাক্তন আপ্ত-সহায়ক সুকান্ত আচার্যের বাড়িতে। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সুপারিশ সংক্রান্ত নথি-সহ বিভিন্ন কাগজপত্র সিবিআই আধিকারিকরা খতিয়ে দেখেন। এছাড়া সিবিআই তল্লাশি অভিযান চালায় ব্যারাকপুর পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ দাসের বাড়িতে। তৃণমূল সূত্রে খবর, জয়দীপ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। এছাড়া এদিন তল্লাশি চালানো হয়েছে কলকাতা পুরসভার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পার্থ সরকারের বাড়িতে। তিনি এলাকায় ভজা নামে পরিচিত।

 

দু’দশকের বেশি সময় ধরে তিনি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকার সবাই জানেন। এছাড়াও বৃহস্পতিবার ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আরামবাগের তৃণমূল নেতা গুণধর খাঁড়াকে। এর পাশাপাশি তৃণমূল নেতা সান্টু গঙ্গোপাধ্যায়ের মহেশতলার শিবরামপুরের মার্লিন অ্যাপার্টমেন্টেও চলে তল্লাশি অভিযান। এখানেই শেষ নয়, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে নিযুক্ত স্পেশাল ডিউটি অফিসার প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও সিবিআই হানা দেয়। এসব দেখে একটা প্রশ্নই সবার মনে ঘুরছে, আর কতদিন ধরে চলবে এই তল্লাশি? নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের মাথারা কবে ধরা পড়বেন সেই প্রশ্ন বারবার তুলছে আদালত। তদন্তের গতি নিয়েও আদালত বহুবার প্রশ্ন তুলেছে। এই আবহের মধ্যে সিবিআই দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে ব্যস্ত। আর সেই সূত্রেই উঠে আসছে নিত্যনতুন নাম।

 

তাই প্রশ্ন, আর কতজন যুক্ত রয়েছেন এই পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির সঙ্গে? যেভাবে একের পর এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলছে, তাতে নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়ছে শাসক দলের। শহর থেকে গ্রাম, তৃণমূলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে যেভাবে দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে তা দেখে সবার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যাচ্ছে। একটাই চর্চা এখন রাজ্য জুড়ে চলছে, তবে কী ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে? নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে আরও কত তৃণমূল নেতানেত্রীর নাম জড়াবে? আর সেই উত্তর খুঁজতেই চলছে সিবিআই এবং ইডি’র তল্লাশি অভিযান।

 

সাধারণ মানুষের প্রশ্ন একটাই, ওই সমস্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে দল কী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে? তৃণমূলের এক শ্রেণির নেতা-নেত্রীদের সম্পত্তির বহর দেখে একটা সময় দলেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ রকেটের গতিতে বেড়েছে। আর সেই সমস্ত তথ্য এখন সামনে আসছে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বিষয়গুলি নিয়ে তদন্ত না করলে এই সমস্ত ঘটনা সামনেই আসত না। তাই বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনায় তৃণমূল নেতাদের যেভাবে নাম জড়াচ্ছে তা শাসক দলের পক্ষে যে অত্যন্ত অস্বস্তিকর সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কোনও পদক্ষেপ করে কিনা সেদিকেই নজর থাকবে সবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − three =