adhir
নিজস্ব প্রতিনিধি: আসন সমঝোতা নিয়ে যত সমস্যা পশ্চিমবঙ্গে। কংগ্রেস, সিপিএম ও তৃণমূলের মধ্যে আসন সমঝোতা হওয়া তো দূরের কথা, শুধু কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে আসন সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী কোনও ভাবেই তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে বহরমপুরে কংগ্রেস প্রার্থী হতে রাজি নন। কিন্তু হাইকমান্ড যদি জোর করে জোট চাপিয়ে দেয় তাহলে আলাদা কথা। তবে এখানেও রয়েছে টুইস্ট! সেক্ষেত্রে অধীর জোটের বিরোধিতা করে প্রয়োজনে নির্দল হয়ে বহরমপুরে লড়তে পারেন বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রে খবর। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে এমন আলোচনা হয়েছে বলে বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও সেই বিষয়টি পুরোপুরি জল্পনার স্তরেই রয়েছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর সেটা যদি হয় তা নজিরবিহীন হবে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করে।
ঘটনা হল টানা পাঁচবার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয় পেয়েছেন অধীর চৌধুরী। অর্থাৎ এবার তিনি ডাবল হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে। গত বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বহরমপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছেন অধীর। যদিও বিধানসভা আর লোকসভা ভোটের অঙ্ক এক নয়। তা সত্ত্বেও সেই ফ্যাক্টরকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত যদি কংগ্রেসের সত্যিই জোট হয় তাহলে অধীরের সমস্যা আরও বাড়তে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে।
গত কয়েক বছরে অধীরের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে কংগ্রেস ছেড়ে একের পর এক নেতা তৃণমূলে যোগদান করেছেন। আর অধীর চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবল বিরোধী বলে পরিচিত। সবচেয়ে বড় কথা মমতা যখন কংগ্রেসে ছিলেন তখনও অধীরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক একেবারেই মসৃণ ছিল না। সেই সূত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হলে তৃণমূল সমর্থকদের ভোট তখন অধীরের দিকে আসবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে অধীরকে হারাতে তৃণমূলের একাংশ উঠে পড়ে লাগবে না তো? অধীরকে হারাতে সেই অংশের ভোট বিজেপি, বা অন্য কোনও নির্দল প্রার্থী এমনকী নোটাতেও চলে যাবে না তো? এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আর সেই কারণেই অধীর ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা বিকল্প চিন্তাভাবনা করছেন বলে জানা যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বহরমপুর কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের কথা ছেড়ে দিন। তার সঙ্গে লোকসভার ভোটের তুলনা হয় না। বিশেষ করে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে দাদার নামে ভোট হয়। জোট ছাড়া কংগ্রেসের টিকিটে তিনি লড়াই করলে ফের বিপুল মার্জিনে জয় পাবেন। আর তৃণমূলের সঙ্গে জোটের প্রশ্নই উঠছে না। কারন তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে দাদা সাংসদ হতে চান না। সেক্ষেত্রে দাদা নির্দল হয়ে লড়লেও অন্য দলগুলির সঙ্গে সমানে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন, এবং তখনও জয় পাবেন বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।” যদিও এই বিষয়টি নিয়ে কোনও তরফ কিছু মন্তব্য করা হয়নি।