কলকাতা: করোনা মোকাবিলায় গত বছরের মার্চ মাস থেকে ভারতে সম্পূর্ণ লকডাউনের ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র সরকার। লকডাউনের জেরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলির দরজায় সেই যে তালা ঝুলেছিল, প্রায় দশ মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনো তা স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানো সম্ভব হয় নি। তাই রাজ্যের স্কুল কলেজ গুলির পঠনপাঠন ক্রিয়া আপাতত চলছে অনলাইনেই। ভ্যাকসিনের আশ্বাস মিললেও এখনি পুরোদমে স্কুল কলেজ চালু করতে নারাজ সরকার। তবে এর মাঝেই পড়ুয়াদের জন্য নতুন করে দুঃসংবাদ নিয়ে এল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সমস্ত কলেজ গুলিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের সেমিস্টার পরীক্ষা হবে আগামী ৮ মার্চ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে, এদিন এমনটাই জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, অতিমারী আবহে অনলাইন মাধ্যমেই সমস্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু এই স্বল্পকালীন সময়ের মধ্যে পড়ুয়াদের সিলেবাস সম্পূর্ণ করা কীভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে শিক্ষকদের কপালে। বস্তুত, অতিমারী আবহে অনলাইন পঠনপাঠন চললেও অনেক ছাত্রছাত্রীই তাতে স্বচ্ছন্দ নন, ফলে শিক্ষাদানের প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পঠনপাঠন শুরু হয়েছে গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে। তাঁদের সম্পূর্ণ পাঠক্রম পড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়া এই আড়াই মাসের মধ্যে কীভাবে সম্ভব হবে ভেবে পাচ্ছেন না অধ্যাপকেরা। এর মধ্যে কোনো কোনো কলেজে আবার চলছে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পরীক্ষাও।
এহেন পরিস্থিতিতে সারা সপ্তাহ ধরে কোনোরকম বিরতি ছাড়াই ক্লাস নিতে হবে, মনে করছেন শিক্ষকরা। আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বিধানসভা নির্বাচনের ভ্রুকুটি এক্ষেত্রে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনাকেও সমূলে বিনাশ করেছে। এক কলেজের জনৈক অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, “সাধারণ ভাবে প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হয় আগস্ট থেকে আর পরীক্ষা থাকে মে কিংবা জুনে। ফলে তখন সিলেবাস নিয়ে কোনোরকম সমস্যা দেখা দেয় না। কিন্তু এই বছরটা ব্যতিক্রম। পড়ুয়াদের কাছে সমস্ত সিলেবাসের জন্য মাত্র ১০ সপ্তাহ সময় থাকবে।” এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়েরও হাত পা বাঁধা। ইউজিসি (UGC) নির্দেশিকা অনুযায়ীই তাঁরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ইউজিসির অনুমতি ছাড়া সিলেবাস কমিয়ে দেওয়াও সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে করোনা আবহে নতুন বছরের শুরুতেই বিপাকে কলেজ পড়ুয়ারা।