কলকাতা: করোনা টিকার আশ্বাস নতুন বছরে নতুন করে হাসি ফুটিয়েছে মানুষের মনে। চলতি মাস থেকেই আসতে চলেছে বহু প্রতিক্ষীত ভ্যাকসিন। অতিমারীর কবল থেকে মুক্তির এই আবহে নতুন বছরে স্বস্তির বার্তা এল জেলের কয়েদিদের ঘরেও।
দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত জেলের কয়েদিদের বাড়ি ফেরার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট, এদিন এমনটাই জানা গেছে আদালত সূত্রের খবরে। তবে অপরাধীদের শাস্তির মেয়াদ অবশ্য ফুরোচ্ছে না এখনি। পুলিশি পাহারায় যে যার বাড়িতে থাকতে পারবেন তাঁরা, জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। রোগীদের জীবনের শেষ কটা দিন যাতে পরিচিত মানুষজনের সঙ্গে খানিকটা স্বস্তিতে কাটে সে জন্যেই এই ব্যবস্থা।
জানা গেছে, এদিন মোট ৩৫ জন কয়েদিকে শর্তসাপেক্ষে গৃহবন্দী থাকার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এদের মধ্যে রয়েছেন ক্যান্সার এবং এইচ আই ভি পজিটিভ (HIV+) রোগী। কারাবন্দী বস্তুত, থাকার অর্থ হল মানুষের স্বাধীন গতিবিধির অধিকার খন্ডন করা। তাই এই সমস্ত অসুস্থ কয়েদিরা যাতে আপৎকালীন পরিস্থিতি ছাড়া নিজেদের বাড়ি ছেড়ে বেরোতে না পারে, পুলিশকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ব্যাপারে প্রত্যেক কয়েদির পরিবারের লোকজনকে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত মুচলেকাও জমা দিতে হবে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টি. বি রাধাকৃষ্ণান এবং অরিজিৎ ব্যানার্জির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানিয়েছে, “যে সমস্ত কয়েদিরা দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছেন, আমাদের মনে হয়েছে তাঁদের কিছুটা সহানুভূতির প্রয়োজন। তাঁরা জীবনের শেষ কটা দিন পরিচিত কাছের মানুষদের সঙ্গে শান্তিতে কাটাবেন।”
এখানেই শেষ নয়, বিচারপতিরা এদিন আরো জানান, “জেলের কয়েদিদের সঙ্গেও যে মানবিক আচরণ করা উচিত তা এখন গোটা বিশ্বেই স্বীকৃত।” বিচারপতি অরিজিৎ ব্যানার্জির কথায়, “এটা কোনো জামিন বা মুক্তি নয়, এক্ষেত্রে বাড়িতে থাকাটাই বন্দীদশা হিসেবে বিবেচিত হবে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে উচ্চ আদালতে উক্ত ৩৫ জন অসুস্থ কয়েদির বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল। তাঁদের জীবনে খুব বেশি দিন বাঁচার আশা নেই, এমনটাই জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। তারপরেই এই মানবিক সিদ্ধান্তের নজির তৈরি গড়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।