জেনেভা: সারা বিশ্বে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে প্রতি মুহূর্তে। ভারতে ইদানিং আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড গড়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ হাজারেরও বেশি মানুষ। কলকাতায় প্রকোপ কিছুটা কমলেও, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ক্ষেত্রে এই ছবি ভয়ানক। প্রথম থেকেই করোনা ঠেকাতে হাতকে জীবানু মুক্ত করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা 'হু'।
হাতের মাধ্যমেই ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করে বেশি। তাই হাতকে জীবানু মুক্ত রাখতে সাবান ও জলের পাশাপাশি অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে বাজারে একাধিক স্যানিটাইজার পাওয়া যাচ্ছে, একাধিক কোম্পানি এই সুযোগে নিজেদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে ইথাইল অ্যালকোহল বা ইথানল ও আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল বা আইসোপ্রোপানল সমৃদ্ধ হ্যান্ড স্যানিটাইজারই একমাত্র আইন স্বীকৃত। ইথানল মূলত মদ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি আগে ব্যবহার করত। তাই এর কার্যকারিতা সম্পর্কে অনেকে ওয়াকিবহাল। সেক্ষেত্রে আইসোপ্রোপানল নতুন। রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রোপিনের সঙ্গে আরও কিছু রাসায়নিক উপাদান মিশিয়ে আইসোপ্রোপানল তৈরি হয়। এটিও ইথানলের মতোই ত্বকের জীবানুনাশক ক্ষমতা সম্পন্ন।
কপ্পুরের মতো আইসোপ্রোপানল উদ্বায়ী পদার্থ। তাই এর সঙ্গে জল মেশানো হয়। এর ফলে কার্যকারিতাও অনেকটা বাড়ে। তবে মিশ্রনে আইসোপ্রোপানলের পরিমান ৬০ শতাংশ রাখা বাঞ্ছ্যনীয়। হু এর নির্দেশিকা অনুযায়ী ৭৫ শতাংশ আইসোপ্রাপনল সমৃদ্ধ হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করাই যুক্তিযুক্ত। এর বাইরে অন্য কোনও অ্যালকোহল দ্বারা তৈরি স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে ত্বকের মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। বাজারে যেসমস্ত ‘রাবিং অ্যালকোহল’ ৭০ শতাংশ আইসোপ্রোপানল নিয়ে তৈরি সেগুলিই ব্যবহার যোগ্য।
উদ্বায়ী হওয়ার পাশাপাশি এটি একটি জ্বলনশীল পদার্থও বটে। তাই খুব সতর্কতার সঙ্গে একে ব্যবহার করা উচিৎ। সতর্কবার্তায় এই স্যানিটাইজারকে কোনও জ্বলন্ত জিনিসের সংস্পর্শে না আনার কথা ঘোষণা করেছে 'হু'। পাশাপাশি সংস্থা জানিয়েছে, এই বিষাক্ত আইসোপ্রাপনল সমৃদ্ধ হ্যান্ড স্যানিটাইজার শ্বাসনালি, খাদ্যনালি, চোখ, ইত্যাদিতে প্রবেশ করলে সেইসব অঙ্গের ব্যপক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি, এর গন্ধ দীর্ঘক্ষণ শুঁকলে নেশা হয়ে যেতে পারে। তাই স্যানিটাইজার কেনার সময় বোতলে লেখা ‘রাবিং অ্যালকোহলে’র পরিমান দেখেই কেনা উচিৎ। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, অনামী কোনও সংস্থার স্যানিটাইজারের থেকে বেশি ভরসা যোগ্য।