বায়রন বিশ্বাস। এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতির চর্চিত নাম। কংগ্রেসের বিশ্বাস ভঙ্গ করে বায়রনের তৃণমূলে যোগদান, রাজনীতির আঙ্গিনায় বড়সড় আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। অথচ ৩ মাস আগে, এই বাইরণ বিশ্বাসই কংগ্রেসের টিকিটে জিতে ঘোষণা করেছিলেন যে, তৃণমূল তাঁকে কিনতে পারবে না। উল্টে তিনিই তৃণমূল কংগ্রেসকে কিনে নেবেন। এই মন্তব্য সামনে আসার পর অনেকেই জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, বাইরন বিশ্বাস ঠিক কত টাকার মালিক? সেই তথ্যই তুলে ধরবো এই প্রতিবেদনে।
যদিও, পুরনো সেই বক্তব্যকে হাতিয়ার করে এখন বায়রনকে নিশানায় নিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। ধেয়ে এসেছে ‘মীরজাফর’ কটাক্ষ! সেইসব বিতর্ক দূরে রেখে বরং জেনে নেওয়া যাক মুর্শিদাবাদে বিড়ি ব্যারন নামে পরিচিত বাইরন বিশ্বাস আসলে কত বড় সম্পদশালী।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে সাগরদিঘি থেকে দাঁড়ান বাইরন বিশ্বাস। ২৩ হাজার ভোটে তিনি জিতেছেন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া তাঁর সম্পত্তির হলফনামার তথ্য বলছে, ২০ কোটির টাকারও বেশি সম্পত্তির মালিক বায়রন বিশ্বাস। এর মধ্যে ব্যাঙ্কে তাঁর নগদের পরিমাণ ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। ব্যাঙ্কে জমা টাকা ও সম্পত্তির পরিমাণ ২২ লাখের বেশি। শেয়ার, বন্ড বাবদ তাঁর সম্পত্তি ৫ কোটি টাকার বেশি। ৩ কোটি টাকার বেশি ধার রয়েছে।
৫০ লক্ষ টাকার জমিজমা এবং ১ কোটি ১৩ লাখ টাকারও বেশির মূল্যের বিল্ডিং রয়েছে বায়রণের। তিনি যে বাড়িতে থাকেন, সেই বাড়ির বাজার মূল্য ৭৫ লক্ষ টাকা। ৪৫ লাখ টাকা দামের গাড়ি রয়েছে। জিৎ বিড়ি কোম্পানির মালিক বাইরন বিশ্বাস উচ্চমাধ্যমিক পাশ। মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকে ব্যবসার হাল ধরেছেন। তারপর এক এক করে কারখানা, স্কুল তৈরি করেন তিনি।
সাগরদিঘি কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করলেও শোনা যায়, প্রথম থেকেই নাকি তৃণমূল ঘেঁষা ছিলেন বাইরন। কিন্তু, ঊপনির্বাচনে সাগরদিঘি থেকে শাসকদলের টিকিট না পাওয়ায় কংগ্রেসের দলীয় দলীয় প্রতীকে দাঁড়ান। জিতেও যান… কিন্তু ৩ মাসের মাথায় দলবদলে চমক দেন তিনি…
যদিও, কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী বিধায়ক বায়রণের তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই গুঞ্জন ছিল। সেই সময়ই সাংবাদিকদের সামনে তিনি দাবি করেছিলেন- তৃণমূল তাঁকে কিনতে পারবে না।
সেই বায়রনই সোমবার যোগ দিলেন তৃণমূলে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন বায়রন বিশ্বাস। যোগদানের পর তিনি দাবি করেন, “আমি যে জিতেছি তাতে কংগ্রেসের কোনও অবদান ছিল না আমি তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। টিকিট পাইনি বলে কংগ্রেসে যাই। বরাবরই আমি তৃণমূলের লোক। আমি যদি বিশ্বাসঘাতকতা করি, সেই জবাব দেবেন জনগণ। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী দিনে তৃণমূলের টিকিটে আরও বেশি ভোটে জিতব”।
বিজেপিকে রুখতে গেলে তৃণমূলই যে একমাত্র বিকল্প সেকথাও উল্লেখ করেন তৃণমূলে যোগ দেওয়া এই নেতা।