মুম্বই: বলিউডের সঙ্গে ক্রিকেট দুনিয়ার সংযোগ বেশ পুরনো৷ শর্মিলা ঠাকুর থেকে অনুষ্কা শর্মা, ক্রিকেটারের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন অনেকেই৷ তবে বলিউডে এমন বহু অভিনেত্রী রয়েছেন যাঁরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করলেও ছাদনাতলায় গিয়েছেন অন্য পুরুষের হাত ধরে। সেই তালিকায় রয়েছেন অমৃতা সিং, নাগমা, কিম শর্মা, অমৃতা অরোরা, দীপিকা পাড়ুকোনের মতো অভিনেত্রীদের নাম।
প্রথমেই আসা যাক অভিনেত্রী অমৃতা সিং-এর কথায়৷ কেরিয়ারের টপে থাকার সময় ক্রিকেটার রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি৷ রবিও সেই সময় বাইশ গজ কাঁপাচ্ছিলেন। একটি পত্রিকার প্রচ্ছদের জন্য ফোটোশুট করতে গিয়েই দু’জনের আলাপ৷ তারপর বন্ধুত্ব ও প্রেম৷ বলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যায়, নিউ ইয়র্কে অমৃতাকে নাকি আংটি হাতে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন রবি। কেউ কেউ মনে করনে, গোপনে আংটিবদলও করে নিয়েছিলেন এই তারকা জুটি। কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক পরিণতি পায়নি৷
অমৃতার সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে রবি একটি পুরনো সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘আমি চাই না আমার স্ত্রী অভিনয়ের পেশায় থাকুক। যাঁকে বিয়ে করব, তাঁর কাছে যেন সবার আগে সংসার থাকে।’’ এ প্রসঙ্গে অমৃতা বলেছিলেন, ‘‘সেই সময় আমিও নিজের কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কাজ ছাড়তে চাইনি। তবে কয়েক বছর পর সম্পূর্ণ গৃহিণী হয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে সংসার পাততে রাজি ছিলাম।’’
অমৃতার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর ১৯৯০ সালে রিতু সিং-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন রবি। এর পরের বছর ১৯৯১ সালে অভিনেতা সইফ আলি খানকে বিয়ে করেন অমৃতা। কিন্তু দু’জনের বিয়েই ভেঙে যায়৷ ২০০৪ সালেই বিচ্ছেদ হয়ে যায় সইফ-অমৃতার৷ এদিকে, ২২ বছর ঘর করার পর ২০১২ সালে রিতুর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় রবির৷
২০০০ সালে যশরাজ ফিল্মসের ‘মহব্বতেঁ’ ছবির হাত ধরে বলিউডে পা রেখেছিলেন অভিনেত্রী কিম শর্মা। ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর ক্রিকেটার যুবরাজ সিং-এর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান কিম। নিজেদের সম্পর্ককে কোনও দিন আড়াল করেননি তাঁরা৷ বহু বছর এক সঙ্গে থাকলেও, তাঁদের প্রেম বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। ব্যক্তিগত কারণে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন দু’জনে। এর পর ২০১০ সালে আলি পুঞ্জানির সঙ্গে নিকাহ সারেন কিম। ছ’বছর পর তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়৷ যে বছর কিমের বিচ্ছেদ হয়, সেই বছরই মডেল-অভিনেত্রী হ্যাজেল কিচকে বিয়ে করেন যুবরাজ।
‘কিস্না: দ্য ওয়ারিওর পোয়েট’ ছবিতে বিবেক ওবেরয়ের বিপরীতে অভিনয় করে বলিউডে সাড়া ফেলেছিলেন ইশা সর্বাণী। ক্রিকেটার জাহির খানের সঙ্গে দীর্ঘ আট বছর সম্পর্কে ছিলেন অভিনেত্রী। বলিপাড়ায় তাঁদের বিয়ে নিয়েও কানাঘুষো শুরু হয়েছিল৷ কিন্তু সেই সম্পর্ক ছাদনাতলায় গড়ায়নি। ৩৮ বছরের ইশা বর্তমানে এক পুত্রসন্তানের ‘সিঙ্গল মাদার’। অন্যদিকে, ২০১৭ সালে অভিনেত্রী সাগরিকা ঘাটগেকে বিয়ে করে সংসার করছেন জাহির।
নব্বইয়ের দশকে বলিউডে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন নাগমা। শোনা যায়, তিনি নাকি এক ভারতীয় ক্রিকেটারের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন৷ ওই ক্রিকেটারের সঙ্গে তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় দেখতেও পাওয়া যায়৷ এর পর থেকেই তাঁকে ঘর ভাঙার জন্য দায়ী করতে শুরু করেন নেটিজেনরা। এমনকি, ভারত কোনও ম্যাচ হারলেও তাঁর জন্য দায়ী করা হত নাগমাকে। অবশেষে সেই সম্পর্কে ইতি টানেন অভিনেত্রী৷ এর পর একাধিক দক্ষিণী অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালেও বিয়ে করা হয়ে ওঠেনি তাঁর৷ আজও ‘সিঙ্গল’ ৪৮ বছরের নায়িকা।
মালাইকা আরোরার বোন অমৃতা অরোরাও এক সময় ক্রিকেটারের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন৷ ইংরজে ক্রিকেটার উসমান আফজলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা অনেকেরই অজানা৷ তবে বন্ধুবান্ধবদের পার্টিতে প্রায়ই একসঙ্গে দেখা যেত দু’জনকে। এক বছর সম্পর্কে থাকার পর প্রেম ভেঙে যায় তাঁদের। ২০০৯ সালে ব্যবসায়ী শাকিল লাদাককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী।
বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী নীনা গুপ্ত এবং ক্রিকেটার ভিভিয়ান রিচার্ডসের সম্পর্ক কারও অজানা নয়৷ ভিভিয়ানের সঙ্গে একত্রবাসও করেন নায়িকা। ভিভিয়ানের সন্তানের মা হন নীনা৷ তবে ভিভিয়ানের সঙ্গে বিয়ে হয়নি তাঁর৷ একমাত্র কন্যাসন্তান মাসাবাকে নিয়েই জীবন কাটান নীনা৷
বর্তমান ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার সঙ্গে ২০১২ সালে সম্পর্কে জড়ান বলি অভিনেত্রী সোফিয়া হায়াত। দীর্ঘ দিন সম্পর্কে থাকার পর সোফিয়া অভিযোগ তোলেন, রোহিত নাকি ভালো মানুষ নন। তার পরেই সোফিয়ার সঙ্গে রোহিতের সম্পর্কে ছেদ পড়ে৷ ২০১৫ সালে ঋতিকা সাজদের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন এই ক্রিকেটার৷
ক্রিকেটার হার্দিক পাণ্ডের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল বলিপাড়ার বহু অভিনেত্রীর। তবে অভিনেত্রী এলি আব্রামের সঙ্গে হার্দিকের সম্পর্ক নিয়ে সবচেয়ে বেশি চর্চা হয়৷ শোনা যায়, ২০১৭ সালে হার্দিকের ভাই ক্রুণাল পাণ্ডের বিয়ের অনুষ্ঠানে হার্দিকের সঙ্গে আলাপ হয় এলির। সেখান থেকেই ঘনিষ্ঠতা৷ ম্যাচ খেলার সূত্রে কোনও ট্যুরে গেলে সেখানেও এলিকে নিয়ে যেতেন হার্দিক।
তবে, তাঁদের সম্পর্কের জল বেশি দূর গড়ায়নি৷ কারণ ছিল মতের অমিল৷ এর পর ২০২০ সালে মডেল-অভিনেত্রী নাতাশা স্ট্যানকোভিচের সঙ্গে বাগ্দানের ঘোষণা করেন হার্দিক। পরে নাতাশার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তিনি৷
বলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যায়, পাকিস্তানের ক্রিকেটার ইমরান খানের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে ছিলেন জিনাত আমন। ১৯৭৮ সালে অভিনেতা সঞ্জয় খানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হলেও এক বছর পর বিচ্ছেদ হয়ে যায়৷ সত্তরের দশকে বলি ইন্ডাস্ট্রির ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলেন জিনাত। যদিও তিনি বা ইমরান কেউই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি৷ তবুও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে চর্চা হয়৷ কানাঘুষো, ১৯৭৯ সালে জন্মদিনে নিজের দলকে ছেড়ে অভিনেত্রীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটিয়েছিলেন ইমরান। তবে সেই প্রেম সফল হয়নি। ১৯৮৫ সালে অভিনেতা মাজহার খানকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী৷
মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের নাতনি রিয়া সেনের সঙ্গে ক্রিকেটার শ্রীসন্থের সম্পর্কের গুঞ্জন উঠেছিল এক সময়৷ শ্রীসন্থের ম্যাচ চলাকালীন মাঝেমধ্যেই গ্যালারিতে দেখা মিলত অভিনেত্রীর। শোনা যায়, ম্যাচ গড়পেটার সঙ্গে শ্রীসন্থের নাম জড়ানোর পরই সম্পর্কে ইতি টানেন রিয়া। ২০১৭ সালে শিবম তিওয়ারিকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী।
২০১৭ সালে অনুষ্কা শর্মার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন বিরাট কোহলি। কিন্তু তার আগে অভিনেত্রী ইজাবেল লেইটের সঙ্গে দু’বছর সম্পর্কে ছিলেন বিরাট। যদিও সেই সম্পর্কের কথা দু’জনের কেউই স্বীকার করেননি। দু’বছর ডেটিং-এর পর ব্যক্তিগত কারণে সম্পর্কে ইতি টানেন বিরাট এবং ইজাবেল।
শোনা যায়, দক্ষিণী অভিনেত্রী রাই লক্ষ্মী এবং দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে এক সময় সম্পর্কে এসেছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। কিন্তু কোনও সম্পর্কই পরিণতি পায়নি৷ বলি অভিনেত্রী আসিনের সঙ্গেও ধোনির সম্পর্ক নিয়ে ফিসফাঁস শোনা যায়। শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালে সাক্ষীকে বিয়ে করেন মাহি।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>