উৎখাত হবে তৃণমূল, ২০০ আসনে জিতবে বিজেপি: নাড্ডা! কালো পতাকা তৃণমূলের

উৎখাত হবে তৃণমূল, ২০০ আসনে জিতবে বিজেপি: নাড্ডা! কালো পতাকা তৃণমূলের

কলকাতা: রাজ্য সফরে এসে সোনার বাংলা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা। দু’দিনের বঙ্গ সফরে এসে দক্ষিণ কলকাতা থেকে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। আজ সকালেই কলকাতা পৌঁছান বিজেপি সভাপতি। এরপরেই হেস্টিংসে দলের নির্বাচনী কার্যলয়ের উদ্বোধন তিনি। সেখানেই বিজেপি সভাপতি বলেন, “আমাদের বাংলার সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এ রাজ্যের সঙ্গে বিজেপির বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।’’ আর সেই প্রসঙ্গ ব্যাখা করতে গিয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে আনেন জেপি নাড্ডা। বাংলার অগ্রগতিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অনেক ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করে তিনি।

দলীয় কর্মসূচীর পর কলকাতায় দলের কর্মিসভায় যোগ দেন জেপি নাড্ডা। সেখান থেকেই ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যব থেকে তৃণমূল উপড়ে ফেলার ডাক দেন বিজেপি সভাপতি৷ জানিয়ে দেন, তৃণমূলকে ‘উৎখাত’ করে বিজেপি ২০০ আসনে জয় পাবে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘‘মমতার আরেক নাম অসহিষ্ণুতা। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে অসহিষ্ণুতা বেড়েই চলেছে।’’ বিগত কয়েকমাসে একাধিক জায়গায় বিজেপি কর্মীদের রহস্যমৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। দলের কর্মরা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হচ্ছে বলে বারবার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির নেতাকর্মীরা। সে প্রসঙ্গ তুলে ধরে জেপি নাড্ডা বলেন, ‘‘রাজ্যে ১৩০ জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আমি নিজে ১০০ জনের তর্পণ করেছি। এটা কোন বাংলা।” এখানেই থামে না থেকে আজও এক বিজেপি কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন তিনি। তবে এখানেই থেমে থাকেননি গেরুয়া শিবিরের অন্যতম এই শীর্ষ নেতা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রেরও অভিযোগ তুলে ঘাসফুলে কাঁটা ফোটানোর চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের কাছে দলটাই পরিবার। অন্যদিকে, বিজেপির দলই পরিবার। সেই জন্য নেতার বাড়ি থেকে নয়, কার্যলয় থেকে দল পরিচলনা করে বিজেপি৷’’

এদিন বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘মহিলাদের ওপর গার্হস্থ্য হিংসা, মানব পাচার এবং ধর্ষণ সবচেয়ে বেশি। ক্রাইম ব্যুরোকে পরিসংখ্যান জানাচ্ছেন না মমতাদি। এমনকী, কোভিডের পরিসংখ্যানও কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাচ্ছেন না।’’ আয়ুষ্মান ভারত থেকে শুরু কিষাণ নিধির মতো বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেনি রাজ্য সরকার। সে প্রসঙ্গ তুলে ধরে এদিন জেপি নাড্ডা দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলি কার্যকর না করে জনগণের ক্ষতিই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  

বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে টানটান উত্তেজনা ও গণনার পর শেষহাসি হেসেছে বিজেপিই। বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির কাছে বড় পরীক্ষা ছিল বিহারের নির্বাচন। সেখানে হাসিমুখে পাশ করে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে এদিন জেপি নাড্ডা বলেন, “বিহারের ভোট দেখিয়ে দিয়েছে।…মোদিজিতেই আস্থা রেখেছে সাধারণ মানুষ। “রাজ্যে তৃণমূল সরকার তোষণের রাজত্ব চালাচ্ছে বলেও এদিন অভিযোগ করেন বিজেপি সভাপতি। রাজ্যে বিজেপির ভোটের হার বাড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরে দলীয় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার চেষ্টা করেন তিনি। নাড্ডা বলেন, “২০০৯ লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৯ সালে সেই হার হয়েছে ৪০ শতাংশ। ” এবারের বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি ২০০ এর বেশি আসন পেয়েছে ক্ষমতা দখল করবে বলে এদিন দাবি করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। তবে, শহরে পা রাখতে না রাখতেই তৃণমূলের তরফে নাড্ডাকে দেখানো হয় কালো পতাকা। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলার সংস্কৃতির ক্ষতি করবে বলে বারবার অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন বাংলার সংস্কৃতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে জেপি নাড্ডা তারই জবাব দিল মনে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অন্যদিকে, যে অসহিষ্ণুতার অভিযোগে বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদ্মে কাঁটা ফুটিয়েছেন, এদিনের সভা থেকেই সেই হাতিয়ারেই রাজ্যের শআসকদলকে আক্রমণ করলেন জগৎ প্রকাশ নাড্ডা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *