bjp
নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গ থেকে লোকসভা নির্বাচনে ৩৫টি আসনে জিততে হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছর রাজ্য সফরে এসে এমনই লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কাছে। যথারীতি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব সেই লক্ষ্যে নিজেদের মতো করে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য বিজেপির প্রধান তিন নেতা শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদার যে যার নিজের মতো করে চলছেন। সম্প্রতি কলকাতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক বৈঠকে বসেছিল বিজেপি। সেখানে কিন্তু তিন নেতাকে এক সঙ্গে দেখা যায়নি। শুধু এই বৈঠক বলে নয়, বহু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ‘ত্রয়ী’কে এক মঞ্চে দেখা যাচ্ছে না বহুদিন ধরেই। স্বাভাবিকভাবেই নীচুতলার কর্মী-সমর্থকদের মনোবল তাতে ধাক্কা খাচ্ছে। এই অবস্থায় যে লক্ষ্যমাত্রা সামনে রয়েছে তার কি ধারে কাছে পৌছাতে পারবে বিজেপি? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।
গত কয়েক বছর ধরে বারবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। এক গোষ্ঠীর নেতা কোনও কর্মসূচির ডাক দিলে অন্য গোষ্ঠীর নেতা তাতে সামিল হন না। সবচাইতে বড় কথা সংবাদমাধ্যমের সামনে একে অপরের নাম না করে নিয়মিত বিবৃতি দিয়েছেন, এমনটাও বহুবার দেখা গিয়েছে। যে বিষয়টি নিয়ে বহুবার রাজ্য নেতৃত্বকে সতর্ক করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তিন নেতার মধ্যে বনিবনা না থাকার কারণে প্রার্থী বাছা নিয়েও রাজ্য বিজেপিকে সমস্যায় পড়তে হবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। উল্লেখ্য দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা প্রার্থী হবেন বলে একটা জল্পনা বহুদিন ধরেই রয়েছে।
গত রবিবার শিলিগুড়িতে গিয়ে একাধিক সামাজিক কর্মসূচিতে সামিল হয়েছিলেন হর্ষবর্ধন। উদ্দেশ্য একটাই এখন থেকে জনসংযোগে নেমে পড়া। কিন্তু অদ্ভুতভাবে সেই কর্মসূচিতে সামিল হননি খোদ শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। শঙ্কর বহুদিন ধরেই দার্জিলিংয়ের বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্তার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। উল্টে শঙ্কর বলেছেন তিনি নাকি জানতেন না এমন কোনও কর্মসূচি শিলিগুড়িতে হচ্ছে। অর্থাৎ এতেই পরিষ্কার শঙ্কর চাইছেন দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে ফের বিজেপির প্রার্থী হোন রাজু বিস্তা। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। এমন অবস্থা বহুদিন ধরেই রাজ্য বিজেপির মধ্যে রয়েছে। আর দেখা গিয়েছে মূলত শুভেন্দু, সুকান্ত ও দিলীপের অনুগামীদের মধ্যেই এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি করে রয়েছে। তাই তাঁদের এক সুতোয় গাঁথা যাবে কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ৩৫ আসনের যে লক্ষ্য তাদের সামনে রয়েছে তার কাছাকাছি বিজেপি যেতে পারে কিনা সেটাই দেখার।