সংখ্যালঘুদের একাংশের সমর্থন সত্যিই কি ভোটেবাক্সে পাবে বিজেপি? জল্পনা তুঙ্গে

সংখ্যালঘুদের একাংশের সমর্থন সত্যিই কি ভোটেবাক্সে পাবে বিজেপি? জল্পনা তুঙ্গে

নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপি বহুদিন ধরেই দাবি করছে তাদের নীতি ‘সবকা সাথ, সবকা বিশ্বাস’-এর সুফল পাচ্ছেন সমাজের প্রত্যেক স্তরের মানুষ। তাই কেন্দ্রের উন্নয়নের জোয়ার দেখে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাংশ পর্যন্ত এখন বিজেপিকে বিশ্বাস করে ভোট দিচ্ছেন বলে গেরুয়া শিবিরের দাবি। শুক্রবার ফের সেই দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চাপড়া বিধানসভা কেন্দ্রে এক জনসভায় আড়াইশো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বিজেপিতে যোগদান করেছেন। যে ঘটনার যথেষ্ট রাজনৈতিক তাৎপর্য আছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপির দাবি শুধু চাপড়া নয়, রাজ্য জুড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাংশ তাদের উপর ভরসা রাখতে শুরু করেছেন।

যথারীতি চাপড়ায় সংখ্যালঘুদের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে উচ্ছ্বসিত শুভেন্দু বলেছেন,”সংখ্যালঘুদের ভুল বুঝিয়ে ভোটে জিতেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএএ নিয়ে মিথ্যা কথা বলেছেন তিনি। কারও নাগরিকত্ব গিয়েছে, একটাও প্রমাণ দেখান। সিএএ হচ্ছে নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, কেড়ে নেওয়ার নয়।” উল্লেখ্য কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত চাপড়া বিধানসভা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত একটি কেন্দ্র। সেখানে এদিন শুভেন্দুর সভা ঘিরে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। সেখানে শুভেন্দুর অভিযোগ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,”পঞ্চায়েত ভোটে পঞ্চান্ন জন খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৭ জন সংখ্যালঘু। সংখ্যালঘুদের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করে তৃণমূল। তাই তৃণমূল যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে সেটা আজ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বুঝে গিয়েছেন। সেই কারণে আজ রোজা রেখেও আড়াইশো জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ বিজেপিতে যোগদান করেছেন।” 

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তবে কী চব্বিশের নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘুু সম্প্রদায়ের একাংশের সমর্থন ভোটবাক্সে পাবে বিজেপি? সত্যিই কী তারা গেরুয়া শিবিরকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন? তবে এখনই সেটা ধরে নেওয়া ঠিক হবে না। আসলে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে স্থানীয় স্তরে নিজেদের মধ্যে অশান্তির কারণে অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি বা অন্য দলে যাচ্ছেন। সেই সূত্রে সংখ্যালঘুদের একাংশ বিজেপিতে যাচ্ছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আশায়। কারণ সেই সমস্ত অঞ্চলে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে রয়েছে বিজেপিই। শুধুমাত্র সেই কারণেই কোথাও কোথাও বিজেপিতেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ যোগ দিচ্ছেন, এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। যদিও বিষয়টি কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই প্রবণতা যদি আরও বারে তবে কিছুটা হলেও উদ্বেগ বাড়বে শাসক দল তৃণমূলের। কারণ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একচেটিয়া সমর্থন তৃণমূল পাবে, এটা সবাই ধরেই নিয়েছে। সেই জায়গা থেকে অন্যরকম কিছু দেখলে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যে চর্চা হবে এটাই কী স্বাভাবিক নয়? সবমিলিয়ে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চাপড়ার ঘটনা নিয়ে যথেষ্ট চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 − 2 =