BJP Plan Increase Lok Sabha Seats
আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে পেশ হতে পারে ‘এক দেশ এক নির্বাচন‘ সংক্রান্ত বিল। যে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা জমে উঠেছে। অ-বিজেপি দলগুলি এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। কিন্তু আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে এই সংক্রান্ত বিল পাশ করে সেটিকে আইনে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর বিজেপি, এমনটাই সূত্রের খবর। এই আবহের মধ্যে আরও একটি বিষয় নিয়ে জল্পনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। শোনা যাচ্ছে আগামী দিনে লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়ানো হবে। সেটা হলে গোটা বিষয়টি নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা পাবে।
আমেরিকার উদ্দেশে রওনা মোদীর, কোয়াড বৈঠক-সহ তিনদিনের গুচ্ছ কর্মসূচি
One Nation One Election Lok Sabha Seats
ঘটনা হল বিজেপি এমন একটি সংগঠিত দল যারা শুধু বর্তমান সময়ের ভিত্তিতে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতি করে না। বর্তমান সময়ের পাশাপাশি ভবিষ্যতের কথা ভেবেও তারা প্রত্যেকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। সেই সূত্রেই নতুন সংসদ ভবনে লোকসভার অধিবেশন কক্ষে ৮৮৮ ও রাজ্যসভায় ৩৮৪ জন সাংসদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থাৎ দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ১২৭২ জন বসতে পারবেন। বর্তমানে রাজ্যসভায় ২৪৫ ও লোকসভায় ৫৪৩ জন সদস্য রয়েছেন। সেই জায়গা থেকে আগামী দিনে দুটি কক্ষেই সদস্য সংখ্যা অনেকটাই বাড়তে চলেছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্রে খবর। তবে সেটা হবে ২০২৭ সালের পরে।
কারণ তার আগে জনগণনা শেষ হয়ে যেতে পারে। এরপর জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিভিন্ন রাজ্যে লোকসভা আসনের সংখ্যা অনেকটাই বাড়ানো হতে পারে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। লোকসভা আসনের পাশাপাশি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যাও। এছাড়া লোকসভার পাশাপাশি বাড়ানো হতে পারে রাজ্যসভার আসন সংখ্যাও। তাই নতুন সংসদ ভবনে আগামী দিনের কথা ভেবে অতিরিক্ত জায়গা রেখে দেওয়া হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল নিশ্চিত।
সুপ্রিম কোর্টের ইউটিউব চ্যানেল হ্যাক্ড! সম্প্রচার নিয়ে বিড়ম্বনা | Supreme Court youtube channel
Seat Increase in Parliament
তবে বিষয়টি নিয়ে যে বিতর্ক দেখা দেবে তা পরিষ্কার। মূলত দক্ষিণ ভারতের পাঁচটি রাজ্য থেকে এই ব্যাপারে প্রবল আপত্তি উঠে আসবে। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা ও কেরল আসন বৃদ্ধির ঘটনায় নিশ্চিতভাবে প্রবল বিরোধিতার পথে হাঁটবে। কিন্তু কেন? ঘটনা হল শিক্ষা-স্বাস্থ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষিণের রাজ্যগুলি পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর পূর্ব বা উত্তর ভারতের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা এই পাঁচটি রাজ্যে মোটের উপর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। তাই জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভায় আসন সংখ্যা বাড়লে দক্ষিণের পাঁচটি রাজ্য থেকে সেই সংখ্যা খুব একটা বাড়বে না। সেক্ষেত্রে দক্ষিণের পাঁচটি রাজ্যে কোনও রাজনৈতিক দল অপেক্ষাকৃত খারাপ ফল করেও যদি পূর্ব, পশ্চিম বা উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে ভাল ফল করে, তাহলে অনায়াসে তারা ম্যাজিক সংখ্যা অর্জন করে দিল্লিতে সরকার গড়তে পারবে। তাই পূর্ব বা উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির রাজনৈতিক গুরুত্ব তখন আরও বেড়ে যাবে।
CBI ব়্যাডারে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ এক ডাক্তার, খোঁজ শুরু! নিখোঁজ নাকি?
One Nation One Election
সেক্ষেত্রে দক্ষিণের তুলনায় অন্যান্য রাজ্যগুলিতে স্বাভাবিকভাবেই উন্নয়নের কাজ বেশি হবে। সেই রাজ্যগুলির কথা মাথায় রেখে বিশেষ বিশেষ প্রকল্পের কথা ভাববে কেন্দ্র, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাই জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভায় আসন বাড়লে দক্ষিণের রাজ্যগুলি প্রবল বিরোধিতা করবে, এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। দক্ষিণ ভারতের বক্তব্য, তাদের রাজ্যগুলিতে জনসচেতনতার মাত্রা অন্য রাজ্যের থেকে অনেকটাই বেশি। তাই সেখানে জনসংখ্যা উত্তর, পশ্চিম বা পূর্ব ভারতের তুলনায় সেভাবে বাড়েনি। সার্বিক শিক্ষার নিরিখেও এই পাঁচটি রাজ্য অন্যদের থেকে এগিয়ে।
Lok Sabha
অন্যদিকে উত্তর, উত্তর-পূর্ব বা পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলি বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। তাই সেই রাজ্যগুলিতে আসন সংখ্যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশের ধারণা। আর এই সমস্ত বিষয়কে মাথায় রেখেই নতুন সংসদ ভবনের দুটি কক্ষে বাড়তি আসন রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিজেপি বহু আগেই নিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরেই নতুন সংসদ ভবনে অধিবেশন বসতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য এই লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি একার জোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।
BJP Electoral Strategy
বর্তমান প্রেক্ষাপট বলছে আগামী দিনে বিজেপির হাল আরও খারাপ হতে পারে। তবে কি সেই কারণেই বিজেপির যে সমস্ত রাজ্য শক্ত ঘাঁটি সেখানে লোকসভায় আসন সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হবে? যেভাবে বিধানসভা কেন্দ্র বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হিন্দু অধ্যুষিত জম্মুতে? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। যদিও এখন বিষয়টি নিয়ে চুপচাপ রয়েছে গেরুয়া শিবির। জনগণনার পরেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে বলে খবর। তাই আগামী কয়েক বছর পর বিষয়টি কোন দিকে গড়ায় সেটাই দেখার।