কলকাতা: ২০১৯ লোকসভা ভোটের ফলাফল বিজেপি ধরে রাখতে পারবে না বাংলায়! এমনটাই উঠে এল তৃণমূল কংগ্রেসের এক সমীক্ষায়। রবিবার এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাস করেন তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা। তিনি জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের ৮ শতাংশ এবং ঝাড়খণ্ডের ২২ শতাংশ ভোটের ধস প্রভাব ফেলবে বঙ্গ বিজেপির একুশের লড়াইয়ে। যদিও এ ব্যাপারে বিজেপি নেতারা সম্পুর্ণ বিমুখ৷ তারা প্রতিনিয়ত সভামঞ্চ ও সাংবাদিক বৈঠকে বলেই চলেছেন, বাংলায় তারা ২০০-র বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসবেন।
তৃণমূল প্রবীণ নেতার কথা অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি কাটিয়ে একুশের নির্বাচনে তৃণমূল ভালো ফল করবে। তিনি এও দাবি করেন, এই ফলাফলের অভ্যাস মিলেছে, গত কয়েক সপ্তাহের সমীক্ষায়। ‘‘২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলকে সামনে রেখে বিধানসভা আসনের হিসেব কষা হলে দেখা যায়, বাংলার মোট ২৯৪ বিধানসভা আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ১৬৪ আসনে এগিয়ে, যেখানে তাদের ঝুলিতে রয়েছে ৪৩ শতাংশ ভোট, যেখানে বিজেপির দখলে রয়েছে ১২১টি আসন এবং ৪০ শতাংশ ভোট। আর সর্বোপরি উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারের প্রতিটি আসনেই দখল রয়েছে গেরুয়া শিবিরের, যা কিন্তু আগামী নির্বাচনে কিছুটা বিক্ষিপ্ত হয়ে সবুজ ঘেঁষা হয়ে উঠতে পারে।’’- এমনটাই জানিয়েছেন এক প্রবীণ নেতা।
এই প্রবীণ নেতা আরও দাবি করেন, দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমান জেলায় ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের মাটি কিছুটা শক্ত হয়েছে এবং আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রতিফলন দেখা যাবে। এদিকে তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘বিজেপি সংখ্যাতত্বে বিশ্বাসে, তারা মাটির রাজনীতি করে না৷’’ ডেরেক আরও বলেন, বর্তমানে বাংলায় তৃণমূল, বাম-কংগ্রেস জোট, নব্য বিজেপি, পুরাতন বিজেপি এবং পরিযায়ীর দল-এই পাঁচ রাজনৈতিক দলের লড়াই চলছে।
বর্তমানে যদিও তৃণমূলের মাটি পুরুলিয়া জেলায় কিছুটা আলগা, তবে তা কাটিয়ে উঠে আগামী দিনে লালমাটির দেশ থেকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে তৃণমূল নেতারা। সমীক্ষার তত্ত্ব অনুযায়ী, আগামী দিনে পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রবল। সবকিছুর মাঝে পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক আকাশ এখনও ধোঁয়াশায়। আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের রাজনীতিতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভোট অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। এই সমীক্ষার ফলাফল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সবথেকে বেশি পছন্দের মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদার ঘোষণা করেছে। যদিও বাংলায় মোদি-শাহ জুটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। আসল সমীক্ষা নয়, আসল ভোটদান, আর সেদিকে তাকিয়ে গোটা বাংলা।