কলকাতা: বিচারপতিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই মর্মে সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তৃণমূল সাংসদের নাম উল্লেখ না করেই প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী৷ এই প্রেক্ষিতে আদালতে লিখিত অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এদিন দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিকাশরঞ্জন বলেন, ‘‘এক জন ভদ্রলোক এক জন নির্দিষ্ট বিচারপতির নির্দেশ নিয়ে অভিযোগ করেছেন৷ ওই বিচারপতি নাকি হাই কোর্ট সমাজ বিরোধীদের রক্ষাকবচ দিচ্ছেন। সমাজবিরোধীরা যাতে অবাধে ঘুরে বেড়াতে পারে সেই ব্যবস্থা করছেন। তাঁর অভিযোগ হাই কোর্টের দিকে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এক জন বিশিষ্ট অধ্যাপক বলেছেন, এটা বন্ধ না হলে হাই কোর্টের গরিমা বিনষ্ট হবে। প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল আমাকে বলেছেন, এই বিষয়টি নিয়ে কিছু করুন। মাফিয়া লিডার সাধারণ মানুষের আস্থা ভঙ্গ করে আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’’
বিকাশরঞ্জন আরও বলেন, ‘‘আমার আবেদন আদালত স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে বিষয়টি দেখুক।’’ এর পরেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা কি মামলা দায়ের করেছেন?’’ বিকাশরঞ্জন জানান, মামলা দায়ের করতে গেলে অ্যাডভোকেট জেনারেলের অনুমতিনিতে হবে। তাই তাঁরা চাইছেন আদালত যেন স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা গ্রহণ করে৷ তিনি যাবতীয় তথ্য আদালতের সামনে তুলে ধরবেন৷ অন্য এক আইনজীবীও নাম না করে বলেন, ‘‘ওই একই ব্যক্তি আগেও আদালত সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন। তখন কিছুটা রাখঢাক করে কথা বলেছেন। এখন সেটাও নেই।’’
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ভোট হিংসার আক্রান্ত দলের আহত কর্মীদের দেখতে এসএসকেএমে গিয়েছিলেন অভিষেক। সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘‘এই হামলার ঘটনায় যারা যুক্ত, তাদের পুলিশ ধরতে পারছে না। কী করে পারবে? হাই কোর্ট তো মাফিয়া ও সমাজবিরোধীদের আশ্রয় দিচ্ছে। এত খুন হয়েছে হাই কোর্টের জন্য।” অভিষেক এ-ও বলেন, তাঁর এই বক্তব্যের জন্য যদি আদালত অবমাননার দায়ে জেলে যেতে হয়, তা হলে তিনি ১০ হাজার বার জেলে যেতে রাজি! কিন্তু তিনি সত্য বলবেনই। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দেওয়ার কারণে এ ভাবেই বিচারপতি মান্থার সমালোচনা করেন তিনি।