biden
নয়াদিল্লি: আগামী সপ্তাহে ৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানী দিল্লিতে বসতে চলেছে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আসর। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৭ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ সঙ্গে আসছেন তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেনও৷ জি২০ সম্মেলনে নিশ্চিত ভাবেই অন্যতম আকর্ষণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ তবে সম্মেলনে যোগ দিতে আসছেন অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানরাও৷ ভারত সহ ১৯ টি দেশ এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ছাড়াও বাংলাদেশের মতো ৯টি দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে দিল্লিতে হবে কূটনৈতিক বৈঠক। এই রাষ্ট্রনায়কদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর নয়াদিল্লি৷ সেই লক্ষ্যে আজ এবং আগামীকাল দু’দিন ধরে চলবে ফুল ড্রেস রিহার্সাল।
কী ভাবে চলবে রিহার্সাল? গোটা কর্মকাণ্ড ঝালিয়ে নিতে নকল বাইডেন, নকল ঋষি সুনাক সাজিয়ে ড্রিল চালাবে দিল্লি পুলিশ৷ ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দর থেকে লুটিয়েন দিল্লির পাশাপাশি মূল সম্মেলন স্থান প্রগতি ময়দানের ‘ভারত মণ্ডপম’, গোটা এলাকাজুড়ে চলবে নজরদারি৷ বন্ধ করে দেওয়া হবে সমস্ত রাস্তাঘাট। ইতিমধ্যেই ফুটপাত থেকে যাবতীয় দোকানপাট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দফায় দফায় চলছে মহড়া৷ এর ফলে অবশ্য নাকাল হতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের৷ যদিও আপাতত এই অসুবিধা মেনেই চলতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দিল্লির একটি পাঁচতারা হোটেলে থাকবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্যরা৷ ওই হোটেলের মাথায় রয়েছে হেলিপ্যাড৷ সেখানেই নামবে হেলিকপ্টার। তার আগেই পরখ করে নেওয়া হবে আপদকালীন ব্যবস্থা। কীভাবে বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, তার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখা হবে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন থাকবেন সর্দার প্যাটেল মার্গের পাঁচতারা হোটেল আইটিসি মৌর্য শেরাটনে। তাঁর জন্য সাজিয়ে ফেলা হয়েছে ১৫ তলার প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইট ‘চাণক্য।’
৪ হাজার ৬০০ বর্গফুটের এই স্যুইটে থাকার জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে দিতে হবে দৈনিক ৫ লক্ষ টাকা। ৭ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি থাকবেন ‘চাণক্যে’র অতিথি হয়ে৷ এই চারদিনে তাঁর থাকার খরচ পড়বে ২০ লক্ষ টাকা। এই স্যুইটে রয়েছে বিশালাকার খাট সহ দুটি বেডরুম, ময়ুর আকৃতির ১২ জনের ডাইনিং টেবিল। রয়েছে স্টাডি রুম, স্পা, প্রাইভেট কিচেনের ব্যবস্থা। মাত্র ৩১ সেকেন্ডে লিফটে চেপে গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে সোজা ১৫তলায় পৌঁছে যাওয়া যাবে। এর আগে ভারত সফরে আসা আমেরিকার চার রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লু বুশ, বারাক ওবামা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চাণক্য স্যুইটেই থেকেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার কোনও ফাঁকফোকড় রাখতে নারাজ দিল্লি পুলিশ৷ ওই ক’দিন হোটেলে কে কোথায় কোন ডিউটিতে থাকবেন, তার পুরো তালিকা থাকবে পুলিশের হাতে। বিদেশি অতিথি আপ্যায়নে গত জুলাই মাস থেকেই হোটেলের কর্মচারীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যাঁকে যে ফ্লোরে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তিনি সেই ফ্লোর ছেড়ে অন্যত্র যেতে পারবেন না। ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ব্যবহারেও থাকছে নিষেধাজ্ঞা। রাষ্ট্রপ্রধানদের স্ত্রী ও সন্তানদের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে ৭০০ কেন্দ্রীয় বাহিনী। পাশাপাশি তীক্ষ্ম নজর রাখবে ৬৯টি বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর৷ সন্দেহভাজন ব্যক্তি বা বস্তুর দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে তারা।