ওয়াশিংটন ডিসি: রাত পোহালেই নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক হবে জো বাইডেনের। গত পাঁচ বছর ধরে হোয়াইট হাউসের যে চেয়ারে বসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, এবার তাতে বসবেন ডেমোক্র্যাট দলের জো বাইডেন। তাঁর সঙ্গে থাকবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এই গুরুত্বপূর্ণ দিনের আগে তাই কার্যত নিরাপত্তায় মুড়ে গেছে গোটা দেশ।
জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসের অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রায় পঁচিশ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে মার্কিন তদন্তকারী সংস্থা ফেডেরাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (FBI) এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা সংস্থা পেন্টাগন। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মুড়ে ফেলা হয়েছে হোয়াইট হাউস। কিছুদিন আগে মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে হামলার ঘটনাই যে এই অতিরিক্ত সতর্কতার কারণ, তা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট অভিষেকের অনুষ্ঠানে একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ২০২১ সালের জো বাইডেনের অভিষেক যেন ফিরিয়ে আনছে ১৯৮৪ সালের ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার স্মৃতি। নিজের দেহরক্ষীর দ্বারাই আক্রান্ত হয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। এক্ষেত্রেও তেমন সম্ভাবনার কথা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না মার্কিন সংসদ।
বস্তুত, ক্যাপিটল হামলায় যুক্ত ছিলেন এক ডজনেরও বেশি মার্কিন মিলিটারি ও ল’ এনফোর্সমেন্ট অফিসাররা। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ক্যাপিটল হামলার ভিডিও ফুটেজেও দুষ্কৃতীদের দেখা গেছে অত্যাধুনিক রণকৌশল ব্যবহার করতে। ট্রাম্প তথা রিপাবলিক সমর্থক সেই সমস্ত অফিসারদের বিশ্বাসঘাতকতার সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না হোয়াইট হাউস। ফলে আরো কড়া হয়েছে নিরাপত্তা বেষ্টনী।
এ প্রসঙ্গে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের এক আর্মি সেক্রেটারি জানিয়েছেন, “আমরা অনবরত নিরাপত্তা প্রক্রিয়াটির দিকে নজর রাখছি। যাঁদের যাঁদের এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের উপরেই নজর রাখা হচ্ছে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত নভেম্বরেই জনগণের ভোটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন জো বাইডেন। কিন্তু তাঁর জিত ভালো চোখে দেখেন নি দেশের রিপাবলিকান দলের সদস্যরা। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও দীর্ঘদিন ধরেই হার স্বীকার করতে নারাজ ছিলেন। জানুয়ারির শুরুতে মার্কিন কংগ্রেস ভবনে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। ট্রাম্প সমর্থক বলেই চিহ্নিত তাঁরা। এই হামলায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমপিচও করা হয়।