আপাতত বিরোধী ঘর ভাঙানোই লক্ষ্য গেরুয়া শিবিরের

আপাতত বিরোধী ঘর ভাঙানোই লক্ষ্য গেরুয়া শিবিরের

কলকাতা: আপাতত বিরোধী শিবিরে ভাঙ্গন ধরানোই কাজ। সংগঠনের পাশাপাশি প্রতি এলাকার নেতাদের কাছে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাবও থাকছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সিপিএমের উজ্জ্বল নেত্রী রিঙ্কু নস্কর বিজেপি’তে যোগদান করেছেন। এলাকায় রিঙ্কুর জনপ্রিয়তা কাজে লাগাতে চায় গেরুয়া শিবির। তবে রিঙ্কু শুধু উদাহরণ হতে পারেন।

প্রতি এলাকায় বিরোধী শিবিরের ভাঙ্গনই এখন প্রাথমিক লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই খবর রটে গিয়েছে, তৃণমূলের দাপুটে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী আগামী ৩০ নভেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন। যদিও, খবরের সত্যতা অনিশ্চিত। বিজেপির পাঁচটি সাংগঠনিক অঞ্চলের দায়িত্বে রয়েছেন পাঁচ জাতীয়স্তরের নেতা। সুনীল দেওধর (ত্রিপুরায় বিজেপির গেম-চেঞ্জর) সামলাবেন মেদিনীপুর। রাড় বঙ্গ সামলাবেন বিনোদ শোনকর, কলকাতার দায়িত্বে দুষ্যন্ত গৌতম, উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে হারিস দ্বিবেদী, নবদ্বীপের দায়িত্বে বিনোদ টাওডে। কিন্তু, সংগঠনের পাশাপাশি, প্রাথমিক ভাবে এলাকার বিরোধী শিবির ভাঙ্গনের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে।

২০১৯ সালে শেষ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৮টি আসন জিতেছিল। ৪০.৬৪ শতাংশ ভোট তারা নিশ্চিত করেছে। যা ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের থেকে ২২.৭৬ শতাংশ বেশি। এই ব্যাপক ভোট বৃদ্ধি ইঙ্গিত করে কোনও কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে। তা যে ধর্মীয় মেরুকরণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। লোকসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে যদি বিধানসভায় বিজেপি, তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামদলগুলি ফলাফল বিচার করতে হয় তবে দেখা যাবে বিজেপি প্রায় ১২২টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। ৪৩.৬৯ শতাংশ ভোট নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ২২টি আসনে জিতেছিল। বিধানসভার ফলাফল বিচার করলে ১৬৩টি আসলে তৃণমূলের এগিয়ে থাকার কথা। আপাতদৃষ্টিতে লোকসভার নিরিখে বিচার করলে বোঝা যায় তৃণমূল অন্তত ৪১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

অঙ্ক বলছে মমতা ১৮টি আসনে হেরে গিয়েছেন তবে ভোটে হারেননি – ৪৩.৬৯ শতাংশ ভোট তাঁর দিকে ছিল। বিজেপি ৪০.৬৪ শতাংশ ভোট তাঁকে অবশ্য চিন্তায় রেখেছিল। কিন্তু, তা ছিল কোভিড এবং আমফান পূর্ববর্তী সময়। বাঙলার রাজনীতিতে কোভিড এবং আমফান বড় ভূমিকা গ্রহণ করেছে। শাসক দলের বিরুদ্ধে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যদিও অতীতে নারদা বা সারদা কেলেঙ্কারির মত দূর্নীতি রাজনৈতিক ভাবে তৃণমূলকে কোণঠাসা করলেও ভোটযন্ত্রে তার শূন্য প্রভাব পড়েছে। তা নিয়ে মমতা চিন্তিত নয়। কিন্তু, মেরুকরণের চাল মমতা ২০১৯ সালে বুঝে উঠতে পারেনি। সেক্ষেত্রে, মেরুকরণকেই অস্বীকার করার কথা ভাবতে পারবেন না মমতা। কারণ তাতে আখেরে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *