সুকান্ত, শুভেন্দু, দিলীপের মধ্যে ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে সভার দায়িত্ব ভাগ! সংখ্যার বৈষম্যে উঠছে প্রশ্ন

সুকান্ত, শুভেন্দু, দিলীপের মধ্যে ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে সভার দায়িত্ব ভাগ! সংখ্যার বৈষম্যে উঠছে প্রশ্ন

কলকাতা: বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন৷ এই নির্বাচন যে কেন্দ্রের শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে মসৃণ হবে না, সে দাবি করা হয়েছে খোদ আরএসএস-এর মুখপত্রে৷ রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘অর্গানাইজার’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট ও বাস্তবের পটভূমিতে দাঁড়িয়ে দেখতে গেলে আগামী লোকসভা ভোটে আর মোদী ম্যাজিক কাজ করবে না৷ এর প্রমাণ মিলেছে হালের কর্ণাটক ভোটে৷ রাজনীতির কারবারিদের মতে, কর্ণাটকই হতে পারে লোকসভার খেলা ঘোরানোর পিচ৷ এই অবস্থায় তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে মরিয়া বিজেপি দেশ জুড়ে প্রচারে নেমেছে৷ গত ন’বছরে নরেন্দ্র মোদী সরকার কোন কোন ক্ষেত্রে সাফল্য পেয়েছে, সেই খতিয়ান তুলে ধরাই এখন পদ্ম শিবিরের অন্যতম লক্ষ্য৷ আর প্রচার অভিযান নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিশেষ নজর রয়েছে বাংলার উপরে৷ চলতি জুন মাসেই রাজ্যের ২৯৪ বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে সভা করবে বিজেপি। কোন সভায় কোন নেতা থাকবেন, সেই তালিকাও প্রস্তুত। 

জানা গিয়েছে, বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্র ঘুরে মোট ৬৯টি সভা করবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জন্য ধার্য করা হয়েছে মোট ২৩টি সভা। তার মধ্যে চাকদহ, কাকদ্বীপ এবং বলাগড়ের সভায় শুভেন্দুর পাশাপাশি সুকান্তও উপস্থিত থাকবেন। রাজ্য বিজেপির তৃতীয় মুখ হিসাবে উঠে আসে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষের নাম। তাঁর নাম ধার্য করা হয়েছে ১০টি বিধানসভা এলাকার জন্য।

কেন্দ্রে ন’বছর পূর্ণ করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার৷ দল চাইছে এই ন’বছরের সাফল্যকে হাতিয়ার করে এখন থেকেই লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে দিতে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে মাফিক এ রাজ্যেও প্রচার কর্মসূচি নিয়েছে গেরুয়া শিবির। রাজ্যে বিজেপির ১৩০৯টি সাংগঠনিক মণ্ডল রয়েছে৷ তার মধ্যে এক হাজারটিতে একটি করে সভা করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় বিজেপি’র তিন থেকে চারটি  মণ্ডল রয়েছে৷  প্রথম পর্বে বিধানসভা পিছু একটি করে সভা হবে৷  সেই মতোই সুকান্ত, শুভেন্দু এবং দিলীপের মধ্যে সভার সংখ্যা ভাগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু রাজ্যের প্রধান তিন নেতার সভার সংখ্যায় বিস্তর ফারাক নজর এড়ায়নি রাজনৈতিক মহলের৷ কেন এই পার্থক্য? এ নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের৷ সকলের একটাই বক্তব্য, ‘‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ ও সাংগঠনিক বিষয়।’’

নরেন্দ্র মোদী সরকারের ন’বছর পূর্তি পালনের এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মহা জনসম্পর্ক অভিযান’। তারই অঙ্গ হিসাবে হাজার সভা করবে দল। পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডলে মিছিল, শিল্পী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে৷  প্রথমে জানা গিয়েছিল, ‘মহা জনসম্পর্ক অভিযান’-এ সুকান্ত, শুভেন্দু এবং দিলীপকে সমান দায়িত্ব ভাগ করা হবে। রাজ্য বিজেপি’র প্রধান তিন মুখ ২৯৪টি বিধানসভা ঘুরে ১০০টি করে সভা করবেন। বাকি ৭০০টি সভা করবেন রাজ্যের অন্যান্য নেতা, সাংসদ ও বিধায়করা। দলের পরিচিত মুখদেরও এই কর্মসূচিতে কাজে লাগানো হবে। জুন মাসে প্রথম পর্বে  সুকান্ত, শুভেন্দু এবং দিলীপ মোট ৯৯টি সভা করবেন৷ বাকি ১৯৫টি সভা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার, শান্তনু ঠাকুর-সহ পরিচিত সাংসদ, বিধায়কদের মধ্যে৷ তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ তথা অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষেরও।

 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + 18 =