কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তনমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন প্রেসিডেন্সি জেলের পহেলা বাইশ ওয়ার্ডের বাসিন্দা৷ তবে জেলে যেন শান্তি নেই তাঁর৷ এমনিতে তিনি বেশি কথা বলেন না৷ সেল থেকে বেশি বেরনও না৷ কিন্তু তাতেও কী আর শান্তি আছে! কখনও সহবন্দিরা তাঁকে নিয়ে হাসিমশকরা করছে, কখনও টিটকিরি দিয়ে বলছে ‘মোটা দা টুকি’৷ কখনও আবার জঙ্গি মুসা তাঁকে দেখে মল ভর্তি মগ ছুড়ে মারছে। এই তো ক’দিন আগের কথা, মুসার তাড়া খেয়েই হুড়মুড়িয়ে পড়ে গিয়ে মুখে চোট পেয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তাছাড়া জেলে আসার পর থেকে নাকি তার রাতের ঘুমও উড়েছে। হরেক রকম সমস্যার মাঝেই পার্থর শিরে সংক্রান্তি৷ তাঁর দুর্দশার বন্দোবস্ত করে ফেলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এখন থেকে অন্যান্য কয়েদিদের মতোই জেলে থাকতে হবে পার্থকে৷ জেলে আসা ইস্তক তিনি যে ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পাচ্ছিলেন, এবার থেকে তা সেটি আর মিলবে না৷
আরও পড়ুন- বুধবার থেকেই হাওয়া বদল, চার জেলায় রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস, আপনার জেলা নেই তো?
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)-র হস্তক্ষেপেই পার্থর সেল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে খাট, বিছানা, ইজি চেয়ার। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ক্রমেই জেলের অন্দরে নিজের জন্য ভিআইপি বন্দোবস্ত করে ফেলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাতারাতি তাঁর জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল খাট, নরম বিছানা, গা এলানোর জন্য ইজি চেয়ার। জেলবন্দি নেতার এই সকল বিলাসিতা বন্ধ করতেই তৎপর হয়ে ওঠেন অফিসাররা। সরিয়ে ফেলা হয় এই সমস্ত সরঞ্জাম৷ তাই এবার থেকে অন্যান্য কয়েদিদের মতো মাটিতেই বিছানা পেতে শুতে হবে পার্থকে।
শুধু বিলাসিতাই নয়, তদন্তকারীরা এও জানতে পেরেছেন যে, জেলে একাধিক বন্দির মোবাইল ফোন থেকে গোপনে নিজের ঘনিষ্ঠদের ফোন করতেন পার্থ। এই খবর তদন্তকারী অফিসারদের কানে পৌঁছতেই তাঁরা নড়েচড়ে বসেন। সংশোধনাগারে গিয়ে এই বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেন৷ কিছুদিন আগে পার্থর সেলে গিয়ে তাঁরা তো হতবাক। দেখেন সেখানে রীতিমতো বিলাসেই রয়েছেন তিনি। তড়িঘড়ি ইডি-র অফিসাররা পার্থর সেল থেকে বিলাসের যাবতীয় উপকরণ সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন৷ নির্দেশ মতো সরিয়ে দেওয়া হয় খাট-বিছানা, আরাম কেদারা৷ ফলে এখন তিনি বাকি বন্দিদের মতোই মাটিতেই ঘুমাবেন। বিধায়ক হওয়ার জন্য কোনও সুযোগ সুবিধাও দেওয়া হবে না তাঁকে। তিনি যাতে কোনও ভাবেই মোবাইল ফোন হাতে না পান, সেই ব্যবস্থাও করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা৷
গত বছরের জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সে সময় তিনি ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব এবং রাজ্যের শিল্প, তথপ্রযুক্তি এবং পরিষদীয় মন্ত্রী৷ প্রায় ২৭ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর নাকতলার বাড়ি গ্রেফতার হন পার্থ৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>