দেরিতে হলেও লড়াইয়ের ময়দানে নামলেন বাম ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবীরা

দেরিতে হলেও লড়াইয়ের ময়দানে নামলেন বাম ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবীরা

Leftist Intellectuals

কলকাতা:   দিন দুয়েক আগেই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে সন্দেশখালি পৌঁছে গিয়েছিলেন ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এবার সেখানে পৌঁছে গেলেন সিপিএম ঘনিষ্ঠ বুদ্ধিজীবীরা। সেই দলে রয়েছেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র, দেবদূত ঘোষ, সৌরভ পৌলধী, জয়রাজ ভট্টাচার্য। এছাড়াও ওই দলে রয়েছেন বিমল চক্রবর্তী, সীমা মুখোপাধ্যায়, সৌমিক দাস, মন্দাক্রান্তা সেনরা।

পুলিশ প্রশাসনের চোখ এড়াতে কেউ গামছা, কেউ চাদরে মুখ ঢেকে সন্দেশখালি পৌঁছেছেন। গ্রামে পৌঁছেই মানুষের ভিড়ে মিলে মিশে যান তাঁরা। বিশিষ্টদের ঘিরে ধরে নিজেদের অভিযোগ, সমস্যার কথা তুলে ধরেন গ্রামবাসীরা।

এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় চারজন চারজন করে দলে ভাগ হয়ে গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন বিশিষ্টরা। নতুন পাড়া, পোল পাড়া এলাকায় ঘুরে ঘুরে নির্যাতিতাদের অভিযোগ শোনেন। 

সন্দেশখালি নিয়ে প্রথম থেকে কড়া অবস্থান নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। বার বার আটকে দেওয়া হয়েছে বিরোধীদের। শুভেন্দু, সুকান্তরা এলাকায় ঢুকতে পারেন নি। ওড়নায় মুখ ঢেকে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সদলবলে এলাকায় ঢুকলেও পরে তাঁদেরও আটকে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার নতুন করে আটকানো হয় আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে। গ্রেফতার হন বিধায়ক। সন্দেশখালি যাওয়ার কথা থাকলেও কলকাতার সায়েন্ট সিটির কাছেই এদিন তাঁর গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। পরে তাঁকে ‘প্রিভেন্টিভ অ্যারেস্ট’ করে নিয়ে চলে যায়।  

অন্যদিকে, সন্দেশখালি যাওয়ার পথে বাধা দেওয়া হয় কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকেও। প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় কয়েক জন কংগ্রেস নেতা, কর্মীরও এদিন পথ আটকায় ন্যাজাট থানার পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় কংগ্রেসের নেতাদের। যদিও পুলিশ তাঁদের সন্দেশখালি যেতে দেয়নি। 

যেখানে বিরোধী শিবিরের কাউকে এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ, সেখানে বাদশা মৈত্র, দেবদূত ঘোষ, সৌরভ পালোধীদের এলাকায় পৌঁছে যাওয়া খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। জানা গেছে, আলাদা আলাদা ভাবে নৌকায় চেপে তাঁরা এলাকায় গিয়েছেন।

বাদশা মৈত্রের দাবি, আমরা কেউ নজর এড়িয়ে আসিনি। আগে সন্দেশখালি যাব বলে জানিয়েছিলাম। মানুষের অভাব-অভিযোগের কথা শুনছি। তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছি। গ্রামের মানুষকে মেরুদন্ড সোজা রেখে লড়াইয়ের বার্তা দেন অভিনেতা।

এর আগে সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় তৎকালীন শাসক দলের বিরোধিতা করে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু, সন্দেশখালির ঘটনায় সেই ছবি প্রায় অধরা। অধিকাংশ বিশিষ্টরাই আন্দোলনের মঞ্চ থেকে উধাও। বাম মনোভাবাপন্ন হাতে গোনা কয়েকজন বিশিষ্টকে এদিন এলাকায় দেখা গেলেও, বাকিদের দেখা মেলেনি। কোথায় গেল আন্দোলনের সেই চেনা পরিচিত মুখগুলো? উঠছে প্রশ্ন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 8 =