অজি দর্প চূর্ণ, ৩০ দিন বুক চিতিয়ে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন ভারতের

অজি দর্প চূর্ণ, ৩০ দিন বুক চিতিয়ে ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন ভারতের

 

দেবনীল সাহা: ১৯ ডিসেম্বর, বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির প্রথম টেস্টে ৩৬ রানে অলআউট ভারত। ২৯ ডিসেম্বর, মেলবোর্নে জিতল ভারত। ১১ জানুয়ারি, ১৩১ ওভার ব্যাট করে হারের মুখ থেকে ড্র ছিনিয়ে নিয়ে এল ভারতীয় দল। অবশেষে ১৯ জানুয়ারি, ব্রিসবেনে ঐতিহাসিক টেস্ট ও সিরিজ জয় ভারতের। ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১৯ জানুয়ারি, এক মাসে ব্যর্থতা থেকে সাফল্যের সিঁড়িতে ঘুরে দাঁড়ানোর এ যেন এক অপরাজেয় উপাখ্যান।

ডিসেম্বরের শুরুতে যখন ভারতীয় দল বিরাট কোহলির নেতৃত্বে অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল তখনও কেউ বুঝতে পারেনি সেই টেস্টের পরিণতি কি হতে চলেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে টেস্ট ক্রিকেটের নিজস্ব সর্বনিম্ন স্কোর ৩৬ রানে গুটিয়ে গেল গোটা ভারতীয় দল। প্রথম টেস্টেই লজ্জাজনক হারের মুখ দেখল টিম ইন্ডিয়া। এরপর মেলবোর্নে দ্বিতীয় টেস্টে অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিল বিরাট কোহলির পরিবর্ত হিসেবে আসা অজিঙ্ক রাহানে অধিনায়কত্ব। ৩৬ রানে অলআউট হওয়া একটা দলকে ঘুরিয়ে এনে শতরান করে জয়ের স্বাদ দিলেন তিনি।

তৃতীয় টেস্টে সিডনিতে আরও এক ইতিহাস সৃষ্টি করল ভারতীয় দল। চোট আঘাতে জর্জরিত ভারতীয় দলে তখন নেই কোনও বড় মুখ। দ্বিতীয় ইনিংসে চোট নিয়েই অসামান্য লড়াই করলেন হনুমা বিহারি এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টানা ৩ ঘন্টা খেলে সিডনিতে প্রায় হারের মুখ থেকে দলকে ড্র করালেন তারা। সিরিজ তখনও ১-১। অবশেষে এল সেই বহু প্রত্যাশিত টেস্ট। অস্ট্রেলিয়দের দুর্গ হিসেবে পরিচিত গাব্বার ভয়ঙ্কর আগুনে পিচে চতুর্থ টেস্ট। ভারতীয় দলের অবস্থা তখন আরও খারাপ। দলের বোলিং ইউনিটে নেই কোনও অভিজ্ঞ বোলার। ৪ অনভিজ্ঞ, তার মধ্যে দুই অভিষেককারী বোলারদের নিয়েই সাজানো হয়েছিল ভারতের বোলিং বিভাগ।

কখনও ওয়াশিংটন সুন্দর, কখনও শার্দূল ঠাকুর, কখনও মহম্মদ সিরাজ, কখনও শুভমান গিল, আবার কখনও ঋষভ পন্থের খেলার ওপর ভর করেই গাব্বায় ইতিহাস গড়ল ভারত। ৩৩ বছর পর গাব্বার পিচে হারের মুখ দেখতে হল অস্ট্রেলিয়া দলকে। অসম্ভবকে সম্ভব করল একটা তরুণ অনভিজ্ঞ দল। বুকে হাত রেখে বলুন তো, এই সিরিজের এই পরিণতি কটা লোক ভেবেছিল?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 4 =