army
নিজস্ব প্রতিনিধি: দুই সপ্তাহ অতিক্রান্ত। এখনও উত্তরকাশীতে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককে বাইরে বের করা যায়নি। এই অবস্থায় উদ্ধারকাজে রবিবার নামল সেনাবাহিনী। এর আগে সোজা পথে সুড়ঙ্গে ঢুকতে চেয়েছিলেন উদ্ধারকারীরা। যন্ত্র দিয়ে পাথর কেটে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা চলছিল। একটা সময় সেই যন্ত্র ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে বিপত্তি দেখা যায়। তখন থেকে সুড়ঙ্গে সোজা না ঢুকে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সদস্যরা পাহাড়ের মাথা দিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে সেনাবাহিনী সুড়ঙ্গে প্রবেশ করার জন্য থাকা মূল রাস্তাটি পরিষ্কার করবে। এই বিকল্প পদ্ধতিতেই আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করতে চায় প্রশাসন। গোটা বিষয়টি তদারকি করছেন আন্তর্জাতিক সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিক্স। মূলত তাঁর নির্দেশেই এই বিকল্প পথে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে।
আমেরিকার ‘অগার’ মেশিন সুড়ঙ্গের ভিতর পাথর কেটে এগোতে গিয়ে শনিবার সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। সেই ভাঙা মেশিন সরাতেই দীর্ঘ সময় লাগবে। আমেরিকার ওই ড্রিলিং মেশিনটির ব্লেড সুড়ঙ্গের ভিতরে থাকা ধাতব্য জালে আটকে যাওয়ায় মেশিনটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। তখনই বোঝা যায় আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করতে যথেষ্টই বেগ পেতে হবে। সেই মেশিনের ভাঙা অংশ বের করার প্রক্রিয়া চলছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী মেশিনটির ব্লেড কেটে সেটিকে বের করার কাজ শুরু করেছে রবিবার সকাল থেকেই। ব্লেড কাটার জন্য হায়দরাবাদ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বিশেষ ধরনের ‘প্লাসমা কাটার’ মেশিন। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বেশি রাতের মধ্যে প্রায় ২৫ টন ওজনের ‘অগার’ মেশিনটিকে পুরোপুরি সরিয়ে ফেলা যাবে। আর মেশিন বের করার পর ম্যানুয়াল পদ্ধতি, অর্থাৎ বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিকরা হাত দিয়ে পাথর কেটে উদ্ধারের চেষ্টা করবেন বলে জানা গিয়েছে। আর সেই কাজে থাকবে ভারতীয় সেনা। কিন্তু এভাবে উদ্ধার কাজে অনেকটাই বেশি সময় লাগবে। তাই কতদিনে আটকে থাকা শ্রমিকদের বাইরে বের করা যাবে তা কেউ বলতে পারছেন না।
এই পরিস্থিতিতে নতুন করে বিপদের আশঙ্কা করছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখানে বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। ভারী বৃষ্টি হলে উদ্ধারকাজ যে ব্যাহত হবে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। সবমিলিয়ে এখন অনেকটাই সময় অপেক্ষা করতে হবে। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে বিকল্প পদ্ধতিতে আটকে থাকা শ্রমিকদের বাইরে বের করে আনতে ৪-৫ দিন লেগে যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই এই খবরে উৎকণ্ঠা বাড়ছে আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের। যদিও উত্তরাখণ্ড প্রশাসন জানিয়েছে এখনও পর্যন্ত আটকে থাকা সমস্ত শ্রমিক সুস্থ রয়েছেন। আর সেই খবরটাই ভরসা জোগাচ্ছে সবাইকে।