নয়াদিল্লি: পঞ্জাবে ঝড় তুলে ক্ষমতায় আম আদমি পার্টি (আপ)৷ ঝাড়ু হাতে সকলকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছে খড়গপুর আইআইটি’র প্রাক্তন ছাত্রের দল৷ অথচ তাঁর বিরুদ্ধে কম অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা৷ কখনও ‘সন্ত্রাসবাদী’, কখনও ‘খলিস্তানি’, কখনও আবার আর সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে ‘হিন্দুত্বের তাস’ খেলার অভিযোগ উঠেছে৷ তবে অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছিলেন, ‘‘মানুষের ভালবাসার কাছে সব ষড়যন্ত্র হার মানবে।’’
আরও পড়ুন- কারচুপির অভিযোগে রাস্তায় কংগ্রেস! পাঁচ রাজ্যে কার্যত ভরাডুবি
পঞ্জাবের ময়দানে এই লড়াইটা কিন্তু একেবারেই সহজ ছিল না৷ একদিকে ছিল কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে সরানোর চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে ছিল শক্ত ঘাঁটি থেকে অকালি দলকে উপড়ে ফেলার টার্গেট৷ প্রতিপক্ষ হিসাবে ছিল গেরুয়া শিবিরও৷ তবে বিজেপি-কংগ্রেসকে জোড় টক্কর দিয়ে দিল্লির বাইরে ভিনরাজ্যে ক্ষমতা দখল করা কেজরী গত কয়েক মাস ধরেই ছিলেন খবরের শিরোনামে। কারণ প্রতিটি বুথফেরত সমীক্ষাতেই পঞ্জাবে এগিয়ে ছিল আপ।
দিল্লিতে ক্ষমতায় আসার পর দিল্লিবাসীকে নানা সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ তাঁর আমলেই শুরু হয়েছে ‘মহল্লা ক্লিনিক’৷ যেখানে প্রতি রবিবার এমসের চিকিৎসকেরা রোগী দেখতে আসেন। তাছাড়া বিদ্যুতের মাসিক খরচে ছাড় ছিল উল্লেখযোগ্য৷ দিল্লি মডেলের উপর ভিত্তি করেই পঞ্জাবে প্রচার চালিয়েছিলেন তিনি। কেজরির ‘রোডম্যাপ’ বলছে, এর পর তাঁর টার্গেট নিজের রাজ্য হরিয়ানা।
পঞ্জাবে কেজরির লড়াইটা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সাল থেকে৷ দিল্লির গণ্ডি ছাড়িয়ে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে আপ-এর শাখা বিস্তারে তিনি প্রথম যে রাজ্যে লড়াই শুরু করেছিলেন, সেটা ছিল পঞ্চনদের তীর। ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে ১১৭টি আসনের মধ্যে ২০টি পেয়েছিল আপ৷ এর পর তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে পঞ্জাব-হরিয়ানায় শুরু হয় জোরদার আন্দোলন৷ কৃষক বিদ্রোহ এবং বেকারত্ব, এই বিষয়গুলিকে একত্রিত করে বারবার ‘দিল্লি মডেল’-এর প্রচার শুরু করেন কেজরী।
২০১৭ সালে বিধানসভা ভোটের আগে প্রত্যেক পরিবারের অন্তত একজন করে সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। কিন্তু ‘সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি’-র তথ্য বলছে, ২০২১ সালের শেষে পঞ্জাবে ৭.৮৫ শতাংশ বেকারত্ব বেড়ে গিয়েছে। ভোটমুখী পঞ্জাবে বেকারত্ব এবং মাদক সমস্যাকেই প্রধান অস্ত্র করেন কেজরিওয়াল৷ সেই সঙ্গে দেন দুর্নীতিমুক্ত সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি।