ভরি ভরি সোনার গয়নায় সাজেন মা কালী, এবার কেমন হবে কেষ্টর কালীপুজো?

ভরি ভরি সোনার গয়নায় সাজেন মা কালী, এবার কেমন হবে কেষ্টর কালীপুজো?

বোলপুর: তিনি ছিলেন বীরভূমের বেতাজ বাদশা৷ লাল মাটির দেশে মুকুটহীন এই সম্রাটের আধিপত্য কারও অজানা নয়৷ ভোটের ময়দান থেকে পুজোর মণ্ডপ, সব কিছুর সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের নাম৷ তবে এবারে তাঁর দুর্গাপুজো কেটেছে গারদের পিছলে৷ কালীপুজোতেও মুক্তির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কেষ্ট ছাড়া কী ভাবে হবে বীরভূমে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের কালী পুজো? তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা৷ 

আরও পড়ুন- লন্ডন যাওয়ার খরচ এল কোথা থেকে? সৌমেন্দুকে নিয়ে নতুন প্রশ্ন

ফি বছর অনুব্রতর কালী পুজোর জৌলুস থাকে চোখে পড়ার মতো। নিজের হাতে সোনার গয়নায় মাকে সাজান বীরভূমে তৃণমূল জেলা সভাপতি। সে গয়নাও দেখার মতো৷ এক-আধটা নয়, কয়েকশো ভরি গয়নায় মাতৃ প্রতিমাকে সাজান কেষ্ট৷ চোখ ধাঁধানো সেই পুজো দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষই৷ তবে এবার মাকে নিজের হাতে সাজানো হবে না অনুব্রতর৷ কেমন হবে এবারের পুজো? একই রকম জৌলুস থাকবে কি? প্রশ্ন জেগেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে৷ 

করোনাকালেও মায়ের বেশভূষায় কমতি হয়নি। ২০২০ সালে প্রায় ৩০০ ভরি সোনার গয়নায় সাজানো হয়েছিল মাকে। গত বছর মা কালীকে সাজানো হয়েছিল ৫৭০ ভরি গয়নায়। শোনা যায়, কেষ্টর পুজোয় জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা এই গয়না দিতেন। আর কেষ্ট সেগুলো নিজের হাতে পরিয়ে দিতেন মায়ের গায়ে। জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, অনুব্রত না থাকলেও পুজো বন্ধ হবে না৷ এবারও নিয়ম মেনে পুজো করা হবে৷ তবে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন৷ গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল৷ তাই অনেকে ব্যবসায়ীই এবার গয়না দিতে চাইছেন না৷ তা দেখে অনেকেরই প্রশ্ন, তবে কি ভয়েই গয়না দিতেন ব্যবসায়ীরা?

এদিকে, বীরভূম জুড়ে ছড়িয়ে থাকা অনুব্রতর সম্পত্তির উপর নজর রয়েছে সিবিআই-এর। নজরে রয়েছে অনুব্রত-কন্যার সম্পত্তিও৷ খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাঁর আত্মীয়-ঘনিষ্ট, বাড়ির রাঁধুনির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট৷ চলছে জিজ্ঞাসাবাদ৷ কোনও কিছুই সন্দেহাতীত নয়৷ তাই মা কালীর এই বিপুল গয়না কোথা থেকে আসত, তা নিয়েও প্রশ্ন জাগতে পারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মনে। বিরোধীরা বলছেন, এবার স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কিসের টাকায় মা কালীর গয়না আসত। গোয়েন্দাদের নজর থাকবে কেষ্ট-হীন কালীপুজোয়।

জানা গিয়েছে, এই বছর অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে মাকে গহনা পরাবেন রেবতী রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সহকারী পুরোহিত। এছাড়াও এই বছর সিদ্ধান্ত জেলা কমিটির সদস্য ও শাখা সংগঠন মিলিয়ে মোট ১৫০ জনের থেকে ১০০০ টাকা করে চাঁদা তোলা হবে৷ অর্থাৎ এবার পুজোর বাজেট দেড় লক্ষ টাকা। সাধারণের প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও আপত্তি থাকবে না।