কলকাতা: ভারতীয় সমাজ তথা রাজনীতিতে সম্প্রতি ধর্মীয় ‘লাভ জিহাদের’ গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে। বিবাহের নামে ধর্মান্তরিত করার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার সরব হয়েছে। বিশেষত বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে লাভ জিহাদ বিরোধী তৎপরতা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে আনা হয়েছে ধর্মান্তর বিরোধী আইন (Anti-conversion law)। তবে এবার সেই লাভ জিহাদের ছায়া দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গের মাটিতেও।
ধর্মে আলাদা হওয়ার কারণে বিবাহের উপযুক্ত নথিপত্রে দেখানো সত্ত্বেও হোটেলে ঘর ভাড়া দেওয়া হল না জনৈক দম্পতিকে, এমনটাই অভিযোগ উঠেছে হুগলির এক হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, পদবী দেখে দম্পতির ধর্ম সনাক্ত করেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। আর তারপরেই তাঁদের ঘর ভাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ইতিমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ঠিক কী ঘটেছিল? সূত্রের খবর, সম্প্রতি হুগলির চুঁচুড়ার গোবিন্দনগরে পিকনিক করতে যান তৌসিফ হক নামের এক ব্যক্তি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী জয়ন্তী বিশ্বাস। পিকনিকের মাঝে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন জয়ন্তী দেবী। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে গোবিন্দপুরের সুলেখা লজে যান তৌসিফ বাবু।
লজের কর্তৃপক্ষের কাছে নাম জানালে পদবী শুনেই বেঁকে বসেন তাঁরা। অভিযোগ, বিয়ের বৈধ প্রমাণপত্র দেখিয়েও কোনো সুরাহা হয় না। ওই নথি জাল বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে অসহায় তৌসিফ বাবু খানিক কথা কাটাকাটির পর অন্য হোটেলে যান। পরে জয়ন্তী দেবীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে বর্ধমানের বাড়িতে ফিরে যান তাঁরা। বাড়ি ফিরে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন তৌসিফ হক। ফেসবুকের দেওয়ালে দেওয়ালে মুহূর্তে ভাইরাল হয় তাঁর পোস্ট। হোটেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন নেটিজেনরা।
তৌসিফ হকের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে হুগলির সুলেখা লজ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই দম্পতি বিবাহের নথি দেখাতে অস্বীকার করেন, সে কারণেই ঘর দিতে রাজি হননি তাঁরা। শুধু তাই নয়, তৌসিফ হকের বিরুদ্ধে রীতিমতো তান্ডব চালানোর পাল্টা অভিযোগও এনেছেন কর্তৃপক্ষ। খাস বাংলায় এদিনের ঘটনা যেন নিয়ে এসেছে লাভ জিহাদের ছায়া, এমনটাই মত নেটিজেনদের একাংশের।