election
নিজস্ব প্রতিনিধি: নজিরবিহীন বললেও কম বলা হয়। বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা বললেও কম বলা হয়। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে কোনও উপমাই যেন খাটে না। নির্বাচন ঘোষণার বহু আগেই বঙ্গে আসতে চলেছে দেড়শো কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। যা শুধু পশ্চিমবঙ্গ কেন, অতীতে কোনও রাজ্যে ঘটেছে কিনা কেউ মনে করতে পারছেন না। সন্দেশখালির ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন নিয়ে কমিশন যে কতটা চিন্তিত, এই পদক্ষেপেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১ মার্চ রাজ্যে আসছে ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ৭ মার্চ আসবে আরও ৫০ কোম্পানি। সবমিলিয়ে ভোট ঘোষণার আগেই রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে দেড়শো কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রথম দফায় ১ মার্চ রাজ্যে যে ১০০ কোম্পানি বাহিনী আসছে, তার মধ্যে ২০ কোম্পানি সিআরপিএফ (সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স), ৫০ কোম্পানি বিএসএফ (সীমান্তরক্ষী বাহিনী), ১০ কোম্পানি সিআইএসএফ (সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স), ১০ কোম্পানি এসএসবি (সশস্ত্র সীমা বল), ১০ কোম্পানি আইটিবিপি (ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত বাহিনী)। অন্যদিকে ৭ মার্চ রাজ্যে যে ৫০ কোম্পানি বাহিনী আসছে, তার মধ্যে ১০ কোম্পানি সিআরপিএফ, ৩০ কোম্পানি বিএসএফ, পাঁচ কোম্পানি এসএসবি এবং পাঁচ কোম্পানি আরপিএফ থাকবে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক মহলের কৌতূহল, এখনই যদি এত বাহিনী আসে পরে তাহলে কি হবে?
লোকসভা নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গে সুষ্ঠুভাবে করানোর উপর কমিশন কতটা জোর দিচ্ছে এই পদক্ষেপেই তা স্পষ্ট। আসলে পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েই যে কমিশনের এই পদক্ষেপ সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্বে অন্তত পক্ষে ৫৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে পশ্চিমবঙ্গের একশোর বেশি পুরসভা নির্বাচনে ব্যাপক অশান্তি হয়। অভিযোগ ভোটারদের একটা বড় অংশ নিজের ভোট নিজে দিতে পারেননি। শুধু সাম্প্রতিক সময়কাল বলে নয়, দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গে এমন পরিস্থিতি রয়েছে বলে কমিশন মনে করে। সেই জায়গা থেকে সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে যখন রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে, তখন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের যে যথেষ্ট রাজনৈতিক তাৎপর্য আছে সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই। স্বাভাবিকভাবেই কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে বিরোধীরা।