কলকাতা: তাঁর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক ডাকলেন অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জাহান। বুধবার দুপুর আড়াইটের সময় সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন তিনি৷ মনে করা হচ্ছে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েই প্রতারণার অভিযোগের জবাব দেবেন তারকা সাংসদ৷
নুসরতের বিরুদ্ধে প্রায় ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে৷ ঘটনার তদন্তের আর্জি জানিয়ে সোমবার ইডির দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পান্ডা। পরে রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সেই অভিযোগের সমর্থনে সুর চড়ান। যদিও এ প্রসঙ্গে এখনও মুখ খোলেননি তৃণমূল সাংসদ৷ অভিনেত্রীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘‘ইডির কাছে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তা নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে নারাজ নুসরত জাহান। যেহেতু কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাছে অভিযোগ জানানো হচ্ছে, তাই আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেই অভিযোগের জবাব দেবেন তিনি’। এর পরেই বুধবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন বসিরহাটের সাংসদ। কী বিষয়ে আজকের সাংবাদিক বৈঠক, সে বিষয়টি অভিনেত্রী সাংসদ স্পষ্ট না করলেও, জল্পনা, বিজেপি নেতাদের আনা অভিযোগের জবাব দিতেই বৈঠক ডেকেছেন নুসরত।
প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধ্যায় বেশ কয়েক জন বয়স্ক নাগরিককে নিয়ে ইডির দফতরে যান শঙ্কুদেব। তাঁর অভিযোগ ছিল, ২০১৪ সালে নুসরতের সংস্থা ৪২৯ জনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করে নেয়। চুক্তি হয়েছিল বিনিময়ে ফ্ল্যাট দেবেন তিনি৷ কিন্তু, অভিযোগ, সেই ফ্ল্যাট কেউ পাননি৷ কো-অপারেটিভ সিস্টেমের মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনার জন্য মেসার্স সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি গ্রাহকদের কাছ থেকে ওই টাকা নিয়েছিল। এর পর প্রায় ৯ বছর কেটে গেলেও বিনিয়োগকারীরা কেউই ফ্ল্যাট হাতে পাননি। সেই সময় নুসরতের সংস্থা দাবি করেছিল, রাজারহাট হিডকোর কাছে এই ৪২৯ জনকে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। ৩ কামরার (৩ বিএইচকে) ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। তিন বছরের মধ্যেই ফ্ল্যাটগুলি হস্তান্তর করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন, তাঁরা কোনও ফ্ল্যাট পাননি বলে ইডিকে জানিয়েছেন শঙ্কু।
সেই প্রতিশ্রুতি পালন না করায় ক্রেতারা আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ৷ জানা যায়, মোট ৪২৯ জনের কাছ থেকে ওই কোম্পানির অ্যাকাউন্টে যে টাকা গিয়েছিল, তা দিয়ে ওই কোম্পানির ডিরেক্টররা ব্যক্তিগত ফ্ল্যাট কেনেন। যার মধ্যে নুসরত জাহানও রয়েছেন। নুসরত নাকি ওই টাকায় পাম অ্যাভেনিউতে নিজের একটি ফ্ল্যাট কেনেন৷
যে বয়স্ক নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে শঙ্কুদেব ইডি-র কাছে গিয়েছিলেন, তাঁরা অভিযোগ করেছেন, নুসরতের সঙ্গে ওই সংস্থার যৌথ ডিরেক্টর রাকেশ সিং৷ তবে ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নুসরত নয়, রাকেশই দিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, নুসরত এবং তাঁর বন্ধু যশ দাশগুপ্তের প্রযোজনা সংস্থা ‘মেন্টাল’ নামের একটা ছবি তৈরি করছে। এখন সেই ছবির শ্যুটিংয়ের কাজেই ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী সাংসদ।