আইপিএস থেকে সুপার স্পাই, জেনে নিন অজিত ডোভালের কাহিনী

দিল্লি: তৃতীয় মোদী সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে আরও একবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে পুনর্বহাল হয়েছেন অজিত ডোভাল। ২০১৪ সাল থেকে, টানা তৃতীয় বার এই পদে…

দিল্লি: তৃতীয় মোদী সরকার গঠনের সঙ্গে সঙ্গে আরও একবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে পুনর্বহাল হয়েছেন অজিত ডোভাল। ২০১৪ সাল থেকে, টানা তৃতীয় বার এই পদে তিনি। দীর্ঘ সাঁইত্রিশ বছর পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনীতে কাটিয়ে কীভাবে ‘ভারতের জেমস বন্ড’ হয়ে উঠলেন অজিত? কাহিনী চমকে দেওয়ার মত।

কেরিয়ারের ৭টি বছর কেটেছিল উর্দিতে। বাকি তিরিশটা বছর ধরে আন্ডার কভার এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন ইন্টেলিজেন্ট ব্যুরোর হয়ে। যখন যে দায়িত্ব নিয়েছেন, সাফল্য এসেছে হাতে। কখনও ভিখারি সেজে পাকিস্তানের রাজপথে বসে থাকা, কখনও খলিস্তানিদের ভিড়ে রিকশা চালক হয়ে ঢুকে পড়া, শত্রুপক্ষের ডেরায় ঢুকে স্রেফ কথার খেলায় তাদের মধ্যে ভাঙন ধরিয়ে দেওয়া… শুনে মনে হতেই পারে কোনও সিনেমা! কিন্তু, না… বাস্তবের মাটিতে এই কাজগুলোই করে দেখিয়েছেন এই দুঁদে গোয়েন্দা।

শোনা যায়, কেরিয়ারের শুরুতেই আন্ডারকভার এজেন্ট হিসাবে অজিতকে পাকিস্তানে পাঠিয়েছিল ভারত। লাহোরে এক জন মুসলিম ব্যক্তির ছদ্মবেশে সাত বছর কাটান তিনি। ওই সময় পাক সরকারের চোখে ধুলো দিয়ে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতের হাতে তুলে দেন। পাকিস্তানে থাকা ভারতীয় দূতাবাসেও কাজ করেন। এরপর সেই অভিযান সফল করে ভারতে ফিরে আসেন ডোভাল। কাঁধে আসে নতুন দায়িত্ব।

১৯৮৮ সালে খলিস্তানি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ব্ল্যাক থান্ডার’-এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অজিত। মিজোরামে শান্তি ফেরাতেও অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে কন্দহরে অপহৃত হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান আইসি-৮১৪ থেকে যাত্রীদের মুক্তির বিষয়ে জঙ্গিদের সঙ্গে আলোচনা করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নেন। ইরাকে বন্দি ভারতীয় নার্সদের মুক্তি, পাকিস্তানে আটক ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত আলোচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো অপারেশন শাখার প্রধান ছিলেন অজিত ডোভাল। ২০০৯ সালে অবসর নেন। ২০১৪-য় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরই প্রাক্তন গোয়েন্দাকর্তা ডোভালকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে নিয়ে আসেন নরেন্দ্র মোদী। তারপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জঙ্গিদমনে তাঁর নেতৃত্বেই একের পর এক সাহসী পদক্ষেপ করেছে সরকার।

২০১৬ সালে উরিতে জঙ্গি হানার পর তাঁর নেতৃত্বেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল। ২০১৭ য় ডোকলামে ভারত-চিন যুদ্ধ পরিস্থিতি ডোভালের হস্তক্ষেপে শান্ত হয়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গিহানার পরে পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গিশিবিরে বিমানহানা তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম চর্চিত ঘটনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *