কলকাতা: ২০২০-২০২১ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেট নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটি। কেন্দ্রের বাজেট নিয়ে আশঙ্কা করে তাদের তরফে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়েছে একটি স্মারকলিপিও। গত সোমবার অধীররঞ্জন চৌধুরী, সৌগত রায়, দিলীপ ঘোষসহ রাজ্যের সকল সাংসদকে সেই স্মারকলিপি সারা বাংলা সেভ এডুকেশন সমিতির পক্ষে সেক্রেটারি অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর পাঠিয়েছেন। সংসদে এই বিষয়ে দাবি তোলারও আবেদন জানিয়েছেন তারা।
শিক্ষা বাঁচাও সমিতির ওই স্মারকলিপিতে যে আশঙ্কা করা হয়েছে, তার মধ্যে একদিকে যেমন রয়েছে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের পড়ুয়াদের শিক্ষালাভের বিষয়টি, তেমনই উঠে এসেছে শিক্ষাখাতে ব্যয়ের হিসেব, পাশফেল নিয়ম চালু করার প্রস্তাব প্রভৃতি। সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, যেভাবে শিক্ষায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে দেশের শিক্ষাক্ষেত্র বিদেশি পুঁজি বিচরণের মৃগয়াক্ষেত্রে পরিণত হবে। তাছাড়া শিক্ষার ফি-ও বৃদ্ধি পাবে বলে জানানো হয়েছে। অনলাইন শিক্ষায় যেভাবে জোর দেওয়া হয়েছে, তার ফলে শ্রেণিকক্ষ শিক্ষাদান পদ্ধতির গুরুত্ব হ্রাস পাবে বলেও আশঙ্কা সেভ এডুকেশন সমিতির। কোঠারি কমিশন থেকে শুরু করে সর্বভারতীয় স্তরের শিক্ষা কমিশনের দ্বারা শিক্ষাখাতে ব্যয়ের যে সুপারিশ দেওয়া রয়েছে, সেই নিয়মনীতি তুলে ধরেও বাজেটে ঘোষিত শিক্ষাখাতের ব্যয় নিয়ে শঙ্কায় সারা বাংলা শিক্ষা বাঁচাও সমিতি।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, 'গত বছরের তুলনায় এবছরের বাজেটে শিক্ষাখাতে ব্যয় ৯৪,৫৮৪ কোটি টাকা থেকে ৯৯,৩০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ৪.৭ শতাংশ বৃদ্ধি করলেও এই সময়ের গড় মূল্যবৃদ্ধি ৪ শতাংশ ধরলে এই বৃদ্ধি অতি সামান্য। উপরন্তু শিক্ষাখাতে উক্ত অর্থ জিডিপি-র মাত্র ০.০৪ শতাংশ এবং বাজেটের মাত্র ৩.২৬ শতাংশ। অথচ কোঠারি কমিশন থেকে শুরু করে সমস্ত সর্বভারতীয় স্তরের শিক্ষা কমিশন জিডিপি-র ৬ শতাংশ এবং বাজেটের ১০ শতাংশ শিক্ষাখাতের ব্যয়ের সুপারিশ করেছিল।'
অর্থমন্ত্রকের তরফে খসড়া জাতীয় শিক্ষানীতির কথা বলা হয়েছে বাজেটে। এই শিক্ষানীতি সাধারণ মানুষের পক্ষে সুবিধাজনক হবে জানিয়ে অবিলম্বে এই নীতি কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে তারা। এছাড়া উঠে এসেছে পাশ-ফেল প্রথা চালু করার দাবি। সরকারের তরফে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশফেল চালু করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু প্রথম শ্রেণি থেকেই এই নিয়ম কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে সারা বাংলা সেভ এডুকেশন সমতি।
সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর জানিয়েছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রীকে রাজ্য সেভ এডুকেশন কমিটির তরফ থেকে গতকাল একটি স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে৷ আজ অধীর রঞ্জন চৌধুরী, সৌগত রায়, দিলীপ ঘোষ সমেত রাজ্যের সকল সাংসদকে এই স্মারকলিপির বঙ্গানুবাদ পাঠিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে যে তাঁরা যেন সংসদে এই দাবিগুলিতে সোচ্চার হন।’’