দিল্লি: বিশ্বের দূষণ তালিকায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পরেই তৃতীয় স্থানে ভারত। টানা চার বার দূষণের মুকুট জুটেছে রাজধানীর কপালে। সুইৎজ়ারল্যান্ডের সংস্থা আইকিউএয়ারের ২০২৩ সালের রিপোর্ট অন্তত এমনটাই বলছে। তবে এবার বায়ু দূষণের আরও এক ভয়াবহ দিক উঠে এল গবেষণায়।
বায়ুদূষণ শুধু ফুসফুসের নয়, চোখের জন্যও ক্ষতিকর। বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর রাসায়নিক ও ধূলিকণা চোখের জন্যও খারাপ। যা সবচেয়ে বেশি সমস্যা তৈরি করে শিশু ও ষাটোর্ধ্বদের। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন’ তাদের গবেষণায় এই তথ্য সামনে এনেছে। বাতাসে লাগাতার দূষণ বৃদ্ধির কারণে কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে, তা জানতে একটি সমীক্ষা হয়েছিল। সেই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, বাতাসে ভাসমান দূষিত কণার কারণে চোখের এমন রোগ হতে পারে, যা থেকে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে পারে অথবা তা নষ্টও হয়ে যেতে পারে।
দূষণজনিত কারণে চোখের যে সব রোগ হতে পারে, তার মধ্যে একটি হল ‘ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’। ম্যাকুলা হল রেটিনার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি ছোট বিন্দু। এই ম্যাকুলা সোজাসুজি দেখতে সাহায্য করে। যদি এই ম্যাকুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা হলেই সোজা লাইন দেখতে সমস্যা হয়। যেমন টিভি দেখতে সমস্যা হবে। মনে হবে সব আঁকাবাঁকা। এটা হল রোগের প্রাথমিক ধাপ। ম্যাকুলা যত ক্ষতিগ্রস্ত হবে, ততই সমস্যা বাড়বে। ঝাপসা হবে দৃষ্টি।
বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ধূলিকণা, যানবাহনের ধোঁয়া, ফসল পোড়ানো ধোঁয়া বা কারখানার চিমনি থেকে বেরোনো ধোঁয়া মিলে বাতাসে যে বিষবাষ্প তৈরি করে। সেই দূষিত বায়ু চোখের ম্যাকুলার ক্ষতি করে। রেটিনার মাঝখানে কালো স্পট তৈরি করে। যার জন্য চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা শুরু হয়। রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে অন্ধও হয়ে যেতে পারেন রোগী। তাই সময় থাকতেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞরা।
দূষণের জেরে বিশ্ব জুড়ে প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যে। প্রতি ন’জনের মধ্যে এক জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী দূষণ। হু-র রিপোর্ট জানাচ্ছে, প্রতি বছর বিশ্বে দূষণের জেরে প্রাণ হারান ৭০ লক্ষ মানুষ। দূষণের জেরে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের নানা রোগ ক্রমশ বাড়ছে। এবার সেই তালিকায় জুড়ল চোখের সমস্যাও। যদি দৃষ্টি ঝাপসা হতে শুরু করে, তা হলে দেরি না করে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।