কৃষিতে সংস্কার চাষিদের আয় দ্বিগুণ করবে, দাবি প্রধানমন্ত্রীর

কৃষিতে সংস্কার চাষিদের আয় দ্বিগুণ করবে, দাবি প্রধানমন্ত্রীর

 কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারের আনা কৃষি বিলের বিরুদ্ধে রীতিমতো জেহাদ ঘোষণা করে অনড় অবস্থানে কৃষক সংগঠনগুলি। নায্য সহায়কমূল্যে ফসল কেনার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আশ্বাস সহ একাধিক দাবির পাশাপাশি কৃষি বিলটি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে এখনও পর্যন্ত অনড়কৃষকরা। এই পরিস্থিতিতে শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জোরদার সওয়াল করলেন কৃষি সংস্কার আইনের পক্ষে, তাঁর দাবি নয়া কৃষি সংস্কার আইনের ফলে উপকৃত হবেন চাষিরা, বাড়বে আয়।

তাঁর দাবি, নয়া আইন কৃষক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের বাধা দূর করবে, নতুন বাজার তৈরি করবে এবং চাষিদের আয় দ্বিগুণ করবে। তাঁর মতে, একটি ক্ষেত্রের উন্নতি হলে সমস্ত ক্ষেত্রেই তার প্রভাব পড়ে। এদিন ফিকির ৯৩ তম বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “কিন্তু ভাবুন যদি শিল্পক্ষেত্রগুলির মধ্যে অপ্রয়োজনীয় দেওয়াল তৈরি হয় তখন কী হয়। যতটা বৃদ্ধি হওয়া উচিৎ, কোনও ক্ষেত্রই তেমনটা বৃদ্ধি হয় না।”

দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং অর্থনীতি নিয়ে বলার পরেই কৃষি বিলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেখানেই তিনি বলেন, “কৃষি এবং কৃষি পরিকাঠামো, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, স্টোরেজ, কোল্ড চেনের মতো ক্ষেত্রগুলিকে দেওয়াল দেখা গিয়েছে। এখন এই দেওয়ালগুলি সরানো হয়েছে। এই সংস্কার কৃষকদের নয়া বাজার এনে দেবে, প্রযুক্তির সুবিধা দেবে,বিনিয়োগ আনতে সাহায্য করবে। এই সমস্তগুলিতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন আমার দেশের কৃষকরা।” কৃষি এবং তার সঙ্গে সংযুক্ত ক্ষেত্রগুলির মধ্যে যে দেওয়াল রয়েছে সেগুলিকে সরিয়ে তাদের মধ্যে সেতুবন্ধন করতে হবে এবং সেটাই এখন  দেশের অর্থনীতিতে কাম্য বলে এদিন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বাজার কমিটির নিয়ন্ত্রণে থাকা মাণ্ডির বাইরে কৃষকদের ফসল বিক্রি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “এখন কৃষকদের মাণ্ডি ছাড়াও তার বাইরেও ফসল বিক্রির বিকল্প সুবিধা রয়েছে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতেই এই চেষ্টা চালানো হয়েছে।”

গত বাদল অধিবেশনে কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কারের অঙ্গ হিসেবে তিনটি বিল পাস করিয়েছিল মোদি সরকার। তারপর থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। পঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে হাজার হাজার কৃষক দিল্লির সীমানায় জড়ো হয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু করেছেন। তিনটি বিল প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। ইতিমধ্যে সরকারপক্ষের সঙ্গে কৃষকদের ৬ দফার বৈঠক হলেও কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় থাকায় সেই আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।  বরং আরও বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।

তবে শুধুমাত্র কৃষক বিলই নয়, তারসঙ্গে সঙ্গেই এদিন গ্রামীণ এলাকায় বিনিয়োগের পক্ষেও জোরালো সওয়াল করেন নরেন্দ্র মোদি। গ্রামীণ ও ছোটো শহর এলাকায় বিনিয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “এটা নিশ্চিত যে, একবিংশ শতাব্দীতে ভারতের বৃদ্ধির বেশিরভাগই আসবে গ্রাম ও ছোটো শহর থেকে এবং আপনাদের মতো উদ্যোগপতিদের গ্রাম ও ছোটো শহরগুলিতে বিনিয়োগের এই সুযোগ হারানো উচিৎ নয়। আপনাদের বিনিয়োগ আমাদের গ্রাম ও ছোটো শহরের ভাই ও বোনদের এবং কৃষিক্ষেত্রের দরজা খুলে দেবে।” কৃষি বিক্ষোভ নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। আর সেই কাজের জন্য ফিকির মঞ্চকেই এদিন বেছে নিলেন দেশের প্রধান প্রশাসক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =