এগরাঃ পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এগরা বিস্ফোরণ যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল পাশা ওল্টাতে সময় বেশি লাগে না। দিব্যি চলছে অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রা, এগোচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি। তার মধ্যেই সমীকরণ উল্টে দিল এগরার বাজি কারথানার বিস্ফোরণ। ফাড়াক টা বোঝা গেল শুভেন্দু অধিকারীর পর এগরায় তৃণমূলের প্রতিনিধিরা আসার পর। শুভেন্দু অধিকারী এগরায় এসে যেন গর্জে উঠলেন।তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেন। শুভেন্দুকে দেখে যেন জমা যন্ত্রণা সামনে এল। আর তৃণমূলের প্রতিনিধিদের দেখে যেন জমা ক্ষোভ সামনে এল। বুধবার বিস্ফোরণ বিধ্বস্ত এগরার দুটো ছবি সামনে এল। একদিকে শুভেন্দুকে দেখে আর্তনাদ অন্যদিকে তৃণমূল প্রতিনিধিদের দেখে চোর চোর শ্লোগান।
শুভেন্দু আর মানস ভুইঞাঁ-দোলা সেনদের মধ্যের ফাড়াকটা চোখে আঙুল দিয়ে যেন দেখিয়ে দিল এগরার খাদিকুল এলাকার মানুষ। যেখানে বিস্ফোরণের দাগ টাটকা। পোড়া দেহের সারি, পরিবারের আর্তনাদ। সবমিলিয়ে এগরা ফুঁসছে। সেই ফুঁসতে থাকা এলাকায় বুধবার প্রথমে পৌছলেন শুভেন্দু অধিকারী। যিনি এলাকায় পৌঁছে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিঁধলেন। ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর দাবি তুললেন। পুলিশকে অভিযুক্ত করলেন। শুভেন্দুর বক্তব্যকে সমর্থন করতেও দেখা গেল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের। শুভেন্দু এগরা ছাড়তেই দেখা গেল ঘটনাস্থলে পৌছন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। তখনই যেন বিধ্বস্ত এগরা জেগে উঠল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে শ্লোগান থেকে কটাক্ষ সবই চলল। আটকে দেওয়া হল তৃণমূল প্রতিনিধিদের প্রবেশ পথ। মন্ত্রূী মানস ভুইঞাঁ, সাংসদ দোলা সেন, সৌমেন মহাপাত্র প্রত্যেকেই যেন অকস্মাত্ বিপর্যস্ত হলেন। বিক্ষোভের জেরে শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে কথা বলেই ফিরে যেতে হল মানসদের। তাঁদের দাবি বাম-রাম ষড়যন্ত্র এগরায়। আজ যেভাবে শুভেন্দু অধিকারী এগরায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তোলেন, যেভাবে বাজি কারখানার মালিকের সঙ্গে তৃণমূল যোগের কথা বলেন, সেই বক্তব্যকে যে স্থানীয়রা কিছুটা হলেও সমর্থন করেছেন, তার বড় প্রমাণ তৃণমূল প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এগরা যে বিজেপির বড় তাসে পরিণত তা আজকের ছবিতে অনেকটাই স্পষ্ট। যেখানে পূর্ব মেদিনীপুরে এবারেও শুভেন্দুর প্রাসঙ্গিকতা ম্যাজিক দেখাল। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যখন স্থানীয়দের ক্ষোভ তখন শুভেন্দুকে প্রায় বরণ করে নেওয়ার মতো ছবি পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘুটিকে অনেক বেশি জটিল করে তুলল বলেই মনে করা হচ্ছে।