শুভেন্দুর পর সুকান্ত, ফের একবার তারিখ রাজনীতি! আবারও কি ‘ফ্লপ শো’ দেখাবে রাজ্য বিজেপি?

শুভেন্দুর পর সুকান্ত, ফের একবার তারিখ রাজনীতি! আবারও কি ‘ফ্লপ শো’ দেখাবে রাজ্য বিজেপি?

নিজস্ব প্রতিনিধি: এতদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যা বলতেন এবার সেই কথা শোনা গেল রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের মুখে। তাঁদের দাবি  আগামী পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে রাজ্যে তৃণমূল সরকার পড়ে যাবে। সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তারপরেই দুই বিজেপি নেতার বক্তব্যে রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট জল্পনা তৈরি হয়েছে। বাংলার সরকার পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে পড়ে যাওয়া অসম্ভব নয় বলে রবিবার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেছেন, ‘ আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, পাঁচ মাসের মধ্যে এই রাজ্যের সরকার পড়ে যাবে।’ রবিবার সুকান্ত বলেন, ‘সরকার পাঁচ মাস ছ’মাস যখন খুশি পড়ে যেতে পারে। অসুবিধার তো কিছু নেই। সরকার কী ভাবে চলে? বিধায়কদের সমর্থনে। বিধায়কেরা হঠাৎ মনে করল, আমরা সমর্থন করব না। আমরা অন্য কাউকে সমর্থন  করব। বিধায়কদের তো মনে হতেই পারে। না হওয়ার তো কিছু নেই।’ সেই সঙ্গে  সুকান্তের সংযোজন, ‘আবার ধরুন, এমন গণ আন্দোলন শুরু হল, যে বিধায়কেরা বলল, আমরা আজ থেকে আর বিধায়ক পদে থাকব না। হাত জোড় করে সবাই বিধায়ক পদ ছেড়ে দিল। এরকম গণআন্দোলনও হতে পারে।’  তেমন সম্ভাবনা কি আছে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সব সম্ভাবনাই আছে। রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু নেই।’ 

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যে দাবি রাজ্য বিজেপি সভাপতি করেছেন তা কি আবার ফ্লপ শোয়ে পরিণত হবে? কারণ এর আগে শুভেন্দু অধিকারী একাধিকবার নির্দিষ্ট তারিখের উল্লেখ করে বলেছেন তৃণমূল সরকার পড়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে কিছুই ঘটেনি। সেই সময় শুভেন্দুর বক্তব্য দল ভালভাবে নেয়নি। বলা যায় সুকান্ত বা বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-  সভাপতি দিলীপ ঘোষ কার্যত তখন কটাক্ষই করেছিলেন শুভেন্দুকে। কিন্তু এখন সুকান্তের মুখে একই কথা শোনা যাচ্ছে। এমন কথা কেন বললেন তিনি? এভাবে কী দলের কর্মী সমর্থকদের মোটিভেট করতে চাইছেন সুকান্ত? ঘটনা হল পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির যতটা ভাল ফল করার কথা ছিল সেটা হয়নি বলেই রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন। গত পঞ্চায়েত ভোটের তুলনায় এই বছর আসন বাড়লেও এটাও মনে রাখতে হবে যে এ বছর পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের যে আসন সংখ্যা এবার বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। সেই সূত্রে লোকসভার অধিকাংশ কেন্দ্রে বিজেপি তৃণমূলের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। তাই কর্মী- সমর্থকদের চাঙ্গা করতে সুকান্ত-শান্তনু এমনটা বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে শুভেন্দুর তারিখ রাজনীতি নিয়ে যথেষ্ট আন্দোলিত হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি, উল্টে বিরোধী দলনেতার ‘ফেস লস’ হয়েছে। তবে কি এবারেও তাই হবে? অতীতে কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশে যেভাবে ‘অপারেশন লোটাস’ হয়েছে, হাল আমলে মহারাষ্ট্রেও ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি, সেটা কি পশ্চিমবঙ্গেও দেখা যাবে? এই চর্চা শুরু হয়েছে সুকান্ত-শান্তনুর এমন বক্তব্যের পরেই। যথারীতি বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তাই আগামী ছয় মাসে রাজ্য রাজনীতি কোন খাতে বয় সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − sixteen =