মুম্বই: গুগল সংস্থার অ্যাকাউন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট পদে চাকরি করতেন মুনাফ কাপাডিয়া। মোটা টাকার চাকরি৷ কিন্তু, ছিল না কোনও স্বাধীনতা৷ অনেক দিন ধরেই ভাবছিলেন, কীভাবে চাকরি থেকে বেরিয়ে আসা যায়৷ কিন্তু অর্থ উপার্জনের কোনও রাস্তাই পাচ্ছিলেন না তিনি। অবশেষে তেলেভাজা সিঙ্গারার দোকান খুলে বর্তমানে কোটিপতি এই যুবক৷
গুগলের মতো সংস্থার লোভনীয় চাকরি কেউ ছাড়তে পারেন না৷ কিন্তু মুম্বইয়ের মুনাফ কাপাডিয়া মাথায় ঘুরছিল নিজের কিছু করে দেখাবার ইচ্ছা৷ চাকরি আসলে চাকরিই হয়৷ সেখানে নিজস্বতা বলে কিছুই থাকে না৷ গুগলের মতো সংস্থায় কাজ করার ফলে টাকা নিয়ে কোনও সমস্যা হয়ত ছিল না মুনাফের৷ কিন্তু নিজের ব্যবসা খোলার জেদ ছিল ষোলোয়ানা৷ কিন্তু দীর্ঘ পরিকল্পনার পর লোভনীয় মোটা টাকা চাকরি থেকে বেরিয়ে নিজের ব্যবসা খুললেন মুনাফ৷ সফলতাও পেয়েছেন তিনি৷
মুসৌরি, হায়দরাবাদ ও মুম্বইয়ে গুগলের কাজের সুবাদে মুনাফের বদলি হয়েছিল তিন বার৷ এরপর তিনি চাকরি ছেড়ে দেন৷ নিজের মায়ের হাতের রান্না দিয়ে প্রথম ব্যবসা শুরু করেন মুনাফ৷ মায়ের হাতের রান্না জাদু দিয়ে ডেলিভারি কিচেন খোলেন মুনাফ৷ অনলাইন ডেলিভারির ব্যবস্থা করেন৷ কিন্তু প্রথম দিকে তেমন অর্ডার পাচ্ছিলেন না৷ হতাশার শিকার হয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন মুনাফ৷ কিন্তু ঠিক সেই সময় ফোর্বস ইন্ডিয়া থেকে ফোন আসে মুনাফের কাছে৷ সংস্থা মুনাফের ব্যবসা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে চেয়ে তাঁকে ফোন করে৷ ব্যস! মাথার ভিতর ঘুরতে থাকা জেদ৷ এবার বাস্তব রূপ নিতে শুরু করে৷ তিনি বুঝতে পারেন তাঁর মায়ের রান্নার জাদু কাহিনী ফোর্বস পর্যন্ত পৌঁছে গেছে৷ এরপর ব্যবসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকলেন মুনাফ৷
এরপর মুম্বই শহরে একটি সিঙ্গারার দোকান খুললেন মুনাফ৷ তাঁর সিঙ্গারার দর্শন পেতে লোকজন ভিড় জমাতে শুরু করলেন দোকানে৷ ব্যবসার রমরমা বাড়ে৷ স্বপ্নের যাত্রাপথ দ্রুত গতিতে এগোতে শুরু করে৷ মুনাফের কিচেনের সুনাম করেছেন ঋষি কাপুর, হৃতিক রোশন, রানি মুখার্জী'র মতো বলিউডের একাধিক তারকারা৷ সিঙ্গারার পাশাপাশি মুনাফের স্পেশাল নারগিস কাবাব, ডাব্বা গোস্ত আদি ইত্যাদি পদগুলি মুম্বইয়ে সুপারহিট৷ সবথেকে বেশি উল্লেখযোগ্য মাটন সামোসা৷ বছরে মুনাফ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করেন৷ চাকরি ছেড়ে বর্তমানে স্বাধীন ভাবে কাজ করে চলেছেন মুনাফ কাপাডিয়া৷