নয়াদিল্লি: দেশের সব রাজ্য জেতার পরেও বিজেপি খুশি হতে পারবে না যদি বাংলা হাতছাড়া হয়ে যায়। আর পশ্চিমবঙ্গ যাতে হাতছাড়া না হয়ে যায় তার জন্য বহু আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেড। সদ্য সমাপ্ত হয়েছে বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। আজ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করলেন সপ্তমবারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। কিন্তু বেশী সময় নষ্ট না করে ইতিমধ্যেই বিজেপির লক্ষ্য বাংলার দিকে ঘুরে গিয়েছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই বলা যায়, বিহার পুনরায় দগল করার পর ভারতীয় জনতা পার্টির পরবর্তী টার্গেট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গ।
বিজেপির তরফ থেকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল স্তর থেকে কাজ কমপক্ষে তিন বছর আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। যার তত্ত্বাবধানে রয়েছেন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর আগে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে অপ্রত্যাশিত ভালো ফল করে ভারতীয় জনতা পার্টি। সেই ফল থেকে আত্মবিশ্বাস আরো বেড়েছে বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেডের। এবার তাই কোনরকম সময় নষ্ট না করে আরও জোর কদমে পশ্চিমবঙ্গের ভোট প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। কারণ বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন হতে আর ছ’মাসও বাকি নেই। ইতিমধ্যেই বঙ্গ সফর করে ফেলেছেন অমিত শাহ। উত্তরবঙ্গ সফরে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করেছেন তিনি, একইসঙ্গে দাবি করেছেন, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে সাধারণ মানুষ উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দেবে, কারণ তারা বুঝে গেছে, যে তৃণমূল করে তারা বিশ্বাস করে ২০১১ সালে ক্ষমতায় এনেছিল সেই তৃণমূল এখন দুর্নীতিগ্রস্ত। গোটা রাজ্য জুড়ে অপকর্ম চলছে, অসাংবিধানিকভাবে কাজ চালাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষ নিজের ভুল বুঝতে পেরে তা শুধরে দেবে ২০২১ সালে। অমিত শাহের সফরের আগে রাজ্য সফরে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও। এছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকার বিরোধী আন্দোলন এবং মিছিল করেছে বিজেপি ব্রিগেড।
এদিকে, বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল বিজেপি কর্মী এবং নেতাদের কাজ করতে আরো উৎসাহিত করেছে বলে দাবি করা হয়েছে দলের তরফে। অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে বেছে বেছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের হত্যা করার ঘটনার নিন্দা করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, মৃত্যুর খেলা খেলে কেউ ভোটে জিততে পারবে না। এক্ষেত্রে তিনি যে পরোক্ষভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকারকে আক্রমণ করেছেন তা বলাই বাহুল্য। পাশাপাশি বিজেপির তরফেও দাবি করা হয়েছে, এই ভাবে তাদের কর্মী এবং নেতাদের খুন করে তাদের আত্মবিশ্বাস কমানো যাবে না। এই ধরনের ঘটনা বিজেপির পক্ষেই রায় দেবে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির জাতীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন, ২০১৯ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত বাংলায় কমপক্ষে ২৫০ জন বিজেপি কর্মীকে খুন করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডারা! তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, বিহারের থেকেও পশ্চিমবাংলায় বড় আকারের জয় পাবে বিজেপি। দুই-তৃতীয়াংশ আসন জিতবে বিজেপি।