কলকাতা: গতকাল গরুপাচার কাণ্ডে বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করার পর আজ তাঁকে ১৪ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে গোটা রাজ্যে শোরগোল পড়ে গেছে। এমনকি এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে আসছে রাজ্যের শাসক দলের একাধিক বড় বড় নেতাদের বিরুদ্ধে। গরু পাচার কাণ্ড নিয়ে বড় মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তাঁর স্পষ্ট দাবি, দিদির ভাইপোর বড় অংশ রয়েছে এর মধ্যে! এক কথায়, গরু পাচার কাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারও যুক্ত রয়েছে। অবশ্য এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন অধীর।
কংগ্রেস সাংসদের কথায়, বর্ডার হচ্ছে বিএসএফ অধীন, কিন্তু গরু আসছে রাজ্য থেকে। রাজ্যের মধ্যে দিয়ে যখন বর্ডার পর্যন্ত গরু যাচ্ছে, তখন সেই বিষয়টা নজর রাখার দায়িত্ব রাজ্য পুলিশের। এদিকে রাজ্য পুলিশ রাজ্য প্রশাসনের অধীনে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, গরু পাচার হচ্ছে রাজ্য পুলিশ, রাজ্যের বড় বড় নেতা এবং বিএসএফ-এর যৌথ উদ্যোগে। এর সঙ্গে রয়েছে কাস্টমস। সবাই গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত। অধীরের কথায়, এর সঙ্গে দিল্লি জড়িত, কলকাতাও জড়িত। আরো ব্যাখ্যা দিয়ে অধীর বলেছেন, রাজ্যে যখন গরু প্রবেশ করছে তখন তা সবাই দেখতে পাচ্ছে, বর্ডার অনেক দূর, তার আগে বর্ডার পর্যন্ত যে এলাকা সেটা রাজ্যের। অধীর মনে করেন, এই তদন্ত সঠিকভাবে হলে ব্রাজ্জের অনেক বড় বড় নেতা এবং মন্ত্রীদের নাম সামনে চলে আসবে। এমনকি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় অংশ রয়েছে এর মধ্যে বলে দাবি করেন তিনি!
অধীরের স্পষ্ট দাবি, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য প্রশাসনের একাধিক বড় বড় ব্যক্তিত্বদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। গরু পাচারের পর অর্থের একটা বড় অংশ পাচ্ছে শাসক দলের নেতারা। এই প্রেক্ষিতে তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে অভিযোগ তোলেন। কংগ্রেস সাংসদের কথায়, এমনি এমনি বিএসএফের কাছে গরু যাচ্ছে না। কয়লা পাচার, গরু পাচার এমনকি বালি পাচারের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, সমস্ত রকম দুর্নীতির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবার জড়িয়ে রয়েছে, সঠিক তদন্ত হলে এই সত্য খুব তাড়াতাড়ি সামনে আসবে। এদিকে বিজেপি দাবি করেছে সিবিআইয়ের রেডারে রাজ্য পুলিশের একাংশ রয়েছে। অন্যদিকে সিপিএমের দাবি, এক্ষেত্রে বিজেপি এবং তৃণমূলের বোঝাপড়া রয়েছে। যদিও তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় দাবি করেছেন, বরাবর ভোট এলেই সক্রিয় হয়ে যায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। এবার ঠিক তাই হয়েছে। সেই ২০০৯ সাল থেকেই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।