তমলুক: পদ্ম শিবিরে যোগদান করেই নিজের রং অনেকাংশে বদলে ফেলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বারবার তাঁর মুখে উঠে এসেছে ‘জেহাদি’ শব্দ। আর তাঁর এইরূপ শব্দ প্রয়োগে যথেষ্ট কষ্ট পেয়েছেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন সহকর্মী আবু তাহের৷ সাংবাদিকদের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা আবু তাহের বলেন, এই শুভেন্দুদাকে তিনি চেনেন না। বিজেপিতে যোগদান করে যে তিনি এতটা বদলে যাবেন, বিভাজনের রাজনীতি করবেন, তাও তিনি ভাবতে পারেননি বলেই জানিয়েছেন আবু তাহের৷
২০০৬ সালে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রথম সূরী ছিলেন এই আবু তাহের। পরে তৃণমূলের হয়ে শুভেন্দু অধিকারী হাত মেলান তাঁর সাথে। এই নিয়ে পথচলা শুরু হয় দু’জনের। গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব এবং মঞ্চ থেকে সিপিএম এবং বিজেপির বিরুদ্ধে একযোগে শ্লোগান দেওয়া ও প্রতিবাদে শামিল হওয়া। কিন্তু এই গল্পে ইতি পড়ে গত বছর ১৯ ডিসেম্বর, যখন শুভেন্দু যোগ দেন বিজেপিতে। আর বিজেপি শিবিরে এসেই নিজেকে অনেকাংশেই বদলে ফেলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সভামঞ্চ থেকে তিনি বারবার উচ্চারণ করেছেন ‘জেহাদি’ শব্দটি। উল্লেখ্য, নন্দীগ্রামের ভূতা মোড়ে কয়েকদিন আগে শুভেন্দুর এক ধর্মীয় সভায় হামলা হয়। আর তার সমালোচনায় শুভেন্দু বলেন, জেহাদিরাই এই হামলা চালিয়েছে।
আর শুভেন্দুর এই মন্তব্যের জেরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তাঁর প্রাক্তন বন্ধু আবু তাহের। তিনি বলেছেন, ‘‘নন্দীগ্রামের মানুষ জাত-ধর্ম বোঝে না। এখানে আন্দোলনে সব ধর্মের মানুষই শহিদ হয়েছেন৷ হামলাকারীদের দুষ্কৃতী বলা যেত, জেহাদি কেন বলা হল তাদের?’’ এই মন্তব্যের জেরে তাহেরের ব্যথিত সুর স্পষ্ট হয়েছে অনেকটাই। তিনি এও বলেন, ‘‘শুভেন্দুদার সঙ্গে শেষ কথা যখন হয়েছিল তখন তিনি বলেছিলেন কাউকে কোনোদিন ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না, কিন্তু কথা রাখেননি শুভেন্দুদা।’’ আবু তাহেরের এই মন্তব্যের জেরে যদিও বিজেপি থেকে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলা হয়েছে, বিজেপিকে রুখতে এক সম্প্রদায়ের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। শুভেন্দু যা বলেছে ঠিক বলেছে। এবার কি তবে নন্দীগ্রামের আন্দোলনের মাটিতেও দেখা যাবে ধর্মীয় লড়াই? সম্ভাবনার মেঘ ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে।