BJP-তে যোগ দিচ্ছি, টিকিট পেলে লোকসভা ভোটেও লড়ব, জানিয়ে দিলেন অভিজিৎ

বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি, টিকিট পেলে লোকসভা ভোটেও লড়ব, জানিয়ে দিলেন অভিজিৎ

Abhijit Joins BJP, Ready to Contest Lok Sabha Elections

BJP

কলকাতা: জল্পনার অবসান৷ বিজেপিতেই যোগ দিচ্ছেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ মঙ্গলবার সকালে পদত্যাগ করার পর দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি৷ সেখানেই বিজেপি’তে যোগ দেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন প্রাক্তন বিচারপতি৷ জানান সম্ভাব্য দিনক্ষণ৷ সম্ভবত ৭ মার্চ বিজেপি’তে যোগ দিতে চলেছেন অভিজিৎ৷ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মশিবিরে যোগ না দিলেও, কার্যত ধুয়ে দেন তৃণমূলকে৷ 

এদিন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল কী ভাবে বিজেপি’র সঙ্গে যোগাযোগ হল তাঁর? কার তরফ থেকে প্রথম যোগাযোগ করা হয়েছিল? প্রাক্তন বিচারপতি জানান, দুই তরফ থেকেই পদক্ষেপ করা হয়৷ তিনি বলেন, ‘আমিও বিজেপি’র কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম৷ বিজেপি’ও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল৷’ তবে তিনি লোকসভা ভোটে লড়বেন কিনা, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷ তাঁকে প্রার্থী করা হলে তিনি কোন আসন থেকে লড়বেন সে সম্পর্কেও কোনও মন্তব্য করেননি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ সাফ জানান, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বিজেপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব৷ 

কিন্তু, কংগ্রেস বা সিপিএম নয় কেন? কেন বিজেপি? এ প্রসঙ্গে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি ধর্মে বিশ্বাস করি, ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, তাই সিপিএম-এ যোগ দিইনি। তাদের সঙ্গে আমার মতের মিল হবে না৷ আর কংগ্রেস হল একটি পারিবারিক জমিদারি দল৷ এখানে জয়রাম রমেশের মতো শিক্ষিত মানুষেরা রয়েছেন৷ কিন্তু তাঁরা পদ পান না৷ রাহুল গান্ধীর মতো নেতাদের পিছনে থাকতে হয়৷ তাই সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই নেই৷’’ আর তৃণমূল তাঁর কাছে দুর্নীতিগ্রস্ত একটি দল৷ যাদের সংস্কৃতিই হল বিচারপতিকে আক্রমণ করা। তাঁর কথায়, বিজেপি’ই একমাত্র সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল, যারা তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে৷

অভিজিৎ আরও বলেন, শাসকদল আমাকে নানাভাবে অপমান করেছে, অপমানজনক কথাবার্তা বলা হয়েছে৷ মুখপাত্ররা যা নয়, তাই বলেছে৷ তাঁদের বিভিন্ন মন্তব্যই আমাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে৷ আর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়? উনি তো কুমন্তব্য করার জন্য কুখ্যাত৷ খোঁচা দিয়েই অভিজিৎ বলেন, সম্ভবত তাঁর বেড়ে ওঠাতেই সমস্যা রয়েছে৷ জানি না তিনি কোন ধরনের পরিবার থেকে এসেছে৷ 

সাংবাদিক বৈঠকে উঠে আসে নারদ প্রসঙ্গও৷ যেখানে নাম জড়িয়েছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও৷ প্রাক্তন বিচারপতি স্পষ্ট বলেন, নারদকাণ্ড আসলে একটা চক্রান্ত৷ তৃণমূলের এক নেতার খুড়শ্বশুড়ের অ্যালকামিস্ট নামে একটি সংস্থা ছিল৷ তাঁকে দিয়েই এই কাণ্ড ঘটানো হয়৷ 

এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এও বলেন, তিনি কারও বিরুদ্ধে লড়াই করতে তিনি ভয় পান না৷ কী ভাবে দুর্বত্ত দলের বিরুদ্ধে লড়তে হবে তা দেখিয়ে দিতে তিনি প্রস্তুত৷ কারও নাম উল্লেখ না করেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেন, ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূল নেতার যে দুর্বৃত্ত দল রয়েছে, তাদের মোকাবিলা করে লক্ষ লক্ষ ভোটে হারাব৷ তৃণমূল একটি দুষ্কৃতীদের দল বলে মনে করি। অভিজিৎ-এর কথায়, ‘আমি তৃণমূলকে রাজনৈতিক দল বলেই মনে করি না। তৃণমূল আদ্যোপান্ত একটি যাত্রাদল। ওদের যাত্রাপালার নাম মা-মাটি-মানুষ৷’ 

তবে দরাজ সংশাপত্র দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে৷ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ভালো মানুষ৷ খুবই পরিশ্রমী৷ উনি আমাদের দেশের উন্নতির চেষ্টা করে চলেছেন৷ রাজনীতিবিদ হিসাবে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও যে তিনি সম্মান করেন, তাও স্পষ্ট জানান৷ তবে এর বাইরে আর কাউকে তিনি সম্মান দিতে পারবেন না বলেও সাফ উল্লেখ করেন৷ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিদ্রুপ করতেও ছাড়েননি তিনি৷ প্রাক্তন বিচারপতির কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকৃত রাজনীতিবিদ৷ অন্য যাঁর কথা আপনারা বলছেন, তাকে আমি তালপাতার সেপাই বলে মনে করি। কিন্তু কাকে তিনি তালপাতার সেপাই বলছেন? অভিজিৎ বলেন, ‘‘যাঁকে আপনারা সবাই সেনাপতি বলছেন।  আমি কারও নাম করছি না। আমি এখানে কোনও কুকথা বলতে আসিনি৷ তাঁর নামটাকে আমি কুকথা বলেই মনে করি৷ 

সাংবাদিক বৈঠকে শাহজাহান শেখকে নিয়ে প্রশ্ন করা হসে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তালপাতাল সেপাই বলেছে, বিচারব্যবস্থা নাকি শাহজাহানের গ্রেফতারি আটকেছিল। তালপাতার সেপাই বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে কিছু জানেন না। ওঁর পেটে বোমা মারলেও কিছু বেরোবে না। তাঁর বিরুদ্ধে আদালত যে কিছু ব্যবস্থা নেয়নি, ওঁর ভাগ্য ভাল।’’

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভবিষ্যদ্বাণী, ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের অবস্থা ২০০৯ সালে সিপিএমের মতো হবে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত দলটাই থাকবে না। শুধু কয়েকটা গ্রেফতারির প্রয়োজন।  আর ব্রিগেড সভা৷? তাঁর কথায়, তৃণমূল এ বার জন গর্জন নয়, জন মিউ মিউ সভা করবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 5 =