নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা নির্বাচনের আগে নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকতে চলেছে গোটা রাজ্য। কর্মরত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পদত্যাগ করে রাজনৈতিক ময়দানে আসতে চলেছেন বলে নিজের মুখেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। যে খবরে রাজ্য তথা দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এমনটা যে হতে পারে সেটা কেউ আন্দাজ পর্যন্ত করতে পারেননি। রাজ্য রাজনীতিতে এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম বলেই মনে করা হচ্ছে।
নানান সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সম্ভবত বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন। আর বাস্তবে যদি সেটাই হয় তাহলে অত্যন্ত গুরুতর একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে। সেটি হল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ইস্যু। যা নিয়মিত কাঁটা হয়ে তাঁকে বিঁধতে পারে বলেই ওয়াকিবহাল বহল মনে করছে। কিন্তু কেন? ঘটনা হল নারদ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত শুভেন্দু অধিকারী। টিভির পর্দায় তাঁকে হাত পেতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। তাই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যখন দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, সেই জায়গা থেকে তিনি যদি বিজেপিতে যান, আর সেখানে যদি শুভেন্দুর উপস্থিতিতে মঞ্চে থাকেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলেন, এক সঙ্গে আন্দোলনের ময়দানে নামেন, তখন কী প্রশ্ন উঠবে না? এই প্রশ্ন কী উঠবে না যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এতটাই সরব, সেখানে যাকে টিভি পর্দায় টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার কীভাবে করবেন তিনি? তিনি কী তখন আগের মতোই নারদ মামলাতেও সমস্ত অভিযুক্তর বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে কড়া শাস্তি চাইবেন? এই বিড়ম্বনায় নিশ্চিতভাবে পড়তে হবে তাঁকে।
বর্তমানে রাজ্য বিজেপিতে সবচেয়ে শক্তিধর নেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য সভাপতি হিসেবে সুকান্ত মজুমদার থাকলেও শুভেন্দুর গুরুত্ব যে অনেকটাই বেশি তা সকলেই বোঝেন। কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের কাছেও শুভেন্দু সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়ে থাকেন। সেই জায়গা থেকে যদি সত্যিই বিজেপিতে যোগদান করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, তাহলে একটা সময় শুভেন্দুর নির্দেশে একাধিক কর্মসূচিতে সামিল হতে হবে তাঁকে। যে বিষয়টি নিয়ে তখন তৃণমূল নিশ্চিতভাবে প্রশ্ন তুলবে। যা কিনা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে অস্বস্তি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। সবমিলিয়ে সত্যি সত্যিই বিজেপিতে অভিজিৎবাবু যোগ দিলে ‘শুভেন্দু কাঁটা’ বিষয়টিকে কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।