কলকাতা: বামেদের ব্রিগেডে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর উপস্থিতি নিয়ে উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। সেই উন্মাদনার মাঝেই এদিন যখন মঞ্চে উঠলেন ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (ISF) নেতা, ব্রিগেড প্রান্তর যে ইতিহাসের সাক্ষী থাকল তা বলাই বাহুল্য। বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট চূড়ান্ত না হলেও ব্রিগেডে স্বল্পক্ষণের ভাষণে হাজার হাজার মানুষকে একাই কাঁপিয়ে দিলেন আব্বাস সিদ্দিকী।
ব্রিগেড মঞ্চ থেকে এদিন প্রথমেই বাম শরিক দলগুলিকে জোটে আগ্রহ প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ জানান আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকী। বামেদের সঙ্গে ৩০ আসনে রফা হয়েছে তাঁর দলের। শুধু কংগ্রেসের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত সমঝোতা চূড়ান্ত করা যায়নি। এদিন ব্রিগেড মঞ্চ থেকে আব্বাস জানান, ‘‘যেখানে যেখানে বাম শরিক দল প্রার্থী দিয়েছে আমরা তাঁদের ভোট দেব, তাঁদের জেতাবো।’’ মানুষের স্বার্থে ত্যাগ স্বীকার করে ৩০ আসন নতুন দলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য এদিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন সিদ্দিকী।
বামেদের বোঝাপড়ায় উচ্ছ্বসিত হলেও কংগ্রেস কাঁটা যে এখনও জোটের পক্ষে বাঁধা হয়ে রয়েছে, তা বুঝিয়ে দেন আব্বাস সিদ্দিকী। কেন বামেদের হয়ে গলা ফাটালেন কিন্তু কংগ্রেসের কথা বললেন না, এদিন তাও স্পষ্ট করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “ভাগিদারী করতে এসেছি,কারোর তোষণ করতে নয়। মানুষের স্বার্থে কাজ করতে চাইলে বন্ধুত্বের দরজা খোলা রয়েছে। কেউ যদি হাত বাড়িয়ে দেয় আগামী দিনে এই আব্বাস তাঁদের হয়েও গলা ফাটাবে।”
ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে এদিন বিজেপি আর তৃণমূলকে এক হাত নেন আইএসএফ নেতা। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই তিনি বলেন, “বাংলায় দিদিমণির হাত থেকে ক্ষমতা চলে গিয়েছে,উনি আফসোস করছেন। ভারতের সংবিধান আমাদের যে শিক্ষা স্বাস্থ্য কর্মের অধিকার দিয়েছে আমরা তা অর্জন করবোই।” পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বার্থে ভাষণ শেষে সিদ্দিকী আওয়াজ তোলেন, “ভিক্ষা নয়, অধিকার চাই।” দেশের প্রধানমন্ত্রীর যে ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে, তাঁরও সেই অধিকার রয়েছে আবার রাস্তার ভিখারিরও একই অধিকার রয়েছে বলে জানান তিনি। সবমিলিয়ে আইএসএফ নেতার ব্রিগেড ভাষণ যে রীতিমতো ‘হিট’ তা বলাই বাহুল্য।