মুম্বই: বিয়ের পর বাড়ির সমস্ত কাজকর্ম করা, বাড়ির বাকি সবার ফাইফরমাশ খাটা কিংবা বাড়ির সবার সেবা গড়ার গুরুদায় শুধুমাত্র স্ত্রীয়ের, এমনটা ভাবা কিন্তু উচিত নয়। স্ত্রী কখনোই স্বামীর কিনে রাখা সম্পত্তি হতে পারেনা। বিবাহ শুধুমাত্র অংশীদারিত্ব, এর জেরে কেউ কারো সম্পত্তি হতে পারেনা। সাত বছর পুরানো একটি খুনের মামলার রায়দান করতে গিয়ে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি রেবতী মোহিত দেরের এজলাসের সিঙ্গেল বেঞ্চ এই রায় শোনাল।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে এক গৃহবধূ খুনের মামলায় এই শুনানি ও রায় শোনাল বোম্বে হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ। সাত বছর আগে মহারাষ্ট্রের সোলাপুরের বাসিন্দা সন্তোষ অতকর সকালে উঠে চা না পাওয়ায় তার স্ত্রী মনীষাকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। এরপর খুনের প্রমান লোপাটের উদ্দেশ্যে খুনি সন্তোষ অতকর বাড়িতে রক্তের দাগ মুছে স্নান করে নেয়। কিন্তু পুরো ঘটনার সাক্ষী ছিল তার ৬ বছরের একমাত্র মেয়ে, যে পরবর্তীকালে আদালতেও সাক্ষী দেয়। এই খুনের মামলায় প্রথমে সন্তোষ অতকরকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা শোনায় নিম্ন আদালত। নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে অভিযুক্ত সন্তোষ বোম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে, বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি রেবতী মোহিত দেরে নিম্ন আদালতের রায়কেই বহাল রাখেন।
এই মামলার রায়দানের পূর্বে বোম্বে হাইকোর্ট জানিয়েছে, “চা করার নির্দেশ না করায় স্ত্রীকে খুন করা যায়না”। যদিও নিজের পক্ষে মন্তব্য করে সন্তোষ অতকর জানায়, “স্ত্রী চা বানিয়ে দেবেনা, এই কথা শুনে আমার মাথায় রাগ উঠে যায় এবং তার জেরেই আমি খুন করি”। তবে বাদী পক্ষের এই কথা শুনে বিচারপতি বলেন, “স্ত্রীকে স্বামীর সম্পত্তি ভাবার মধ্যযুগীয় ধারণা এখনও রয়ে গিয়েছে। স্বামীর ইচ্ছা অনুসারে স্ত্রী কাজ করবেন, এই চিন্তা এখনও অধিকাংশের মাথার ঘুরে বেড়ায়। এটা পিতৃতান্ত্রিক ধারণা ছাড়া কিছু নয়৷”