শাহজাহানের থেকে মুক্তি পেতে একজোট মহিলারা, কেন এই পরিস্থিতি বাংলায়? কী বলছেন প্রতিবাদীরা?

শাহজাহানের থেকে মুক্তি পেতে একজোট মহিলারা, কেন এই পরিস্থিতি বাংলায়? কী বলছেন প্রতিবাদীরা?

shahjahan

কলকাতা: ক্ষোভে ফুঁসছে সন্দেশখালি! শাহজাহানের থেকে মুক্তি পেতে এক জোট হয়েছেন মহিলারা৷ হাতে মশাল, মুখে স্লোগান… প্রমিলাবাহিনীর এমন বিদ্রোহের ছবি শেষ কবে দেখা গিয়েছে এ রাজ্যে মনে করা কঠিন৷  কিন্তু কেন এতো আক্রোশ? মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর শাসনকালে এমন পরিস্থিতি বাংলায়? রয়েছে একাধিক প্রশ্ন। (shahjahan)

সন্দেশখালির যে প্রতিবাদ নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। সেই প্রতিবাদী মহিলাদের মধ্যেই এক জন হলেন যূথিকা রায়। চাপা রঙের, শীর্ণকায় সেই মেয়েই এখন সন্দেশখালির শাসক-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ। বার বার মেয়েদের বিক্ষোভের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছে যূথিকাকে। কেন হঠাৎ আন্দোলনে? কোনও দিন রাজনীতি করেছেন? বিজেপি-সিপিএমের সমর্থনেই প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন তিনি? না… যূথিকার দাবি, মহিলাদের এই বিদ্রোহ দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। 

যূথিকার কথায়, সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শাহজাহানের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাধারণ গ্রামাবাসীরা। জমি কেড়ে নেওয়া, নিগ্রহের মতো ঘটনা এতদিন ধরে তাঁরা সহ্য করে এসেছেন… কিন্তু এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকতেই লাঠি, ঝাঁটা হাতে মহিলারা নেমেছেন শাসকদলের নেতার অত্যাচার থেকে মুক্তির খোঁজে। মদের বোতল আর বন্দুক ধরিয়ে তরুণ প্রজন্মকে নষ্ট করেছে শাহজাহান গোষ্ঠী… অভিযোগ যূথিকার। সংবাদমাধ্যমের সামনে সন্দেশখালির নগ্ন চেহারা এই ভাষাতেই ব্যক্ত করেছেন যূথিকা। জানিয়েছেন নিজের অভিজ্ঞতার কথাও।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন যূথিকা। কিন্তু চাকরি মেলেনি। কিন্তু হাল ছাড়েননি। মহিলা টোটো চালক যূথিকাকে সামলাতে হয় তার পরিবারের দায়িত্বও। তাঁকে এবং তাঁর অসুস্থ স্বামীকে কীভাবে অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে শাসক গোষ্ঠীর? সেকথাও জানিয়েছেন যূথিকা।

দলীয় মিটিংয়ে টোটো না নিয়ে যাওয়ায় শাহজাহান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে টোটো বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন যূথিকা। শুধু তাই নয়, আশ্রাব্য ভাষায় তাঁকে গালিগালাজও সহ্য করতে হয়েছে বলে দাবি। রাজনীতির নাম করে সন্দেশখালির বাসিন্দাদের উপর চলতে থাকা এই অত্যাচার নিয়ে মুখ মুখেছেন সেখানকার মহিলারা। বদলে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

সন্দেশখালি কাণ্ডে গত ১০ দিন ধরে ফেরার তৃণমূলের সন্দেশখালি-২ নম্বর ব্লকের সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য শিবপ্রসাদ হাজরা। পুলিশের দাবি, শিবুর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এই শিবু হাজরার বিরুদ্ধে নারী নিগ্রহ-সহ একাধিক অভিযোগে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিদিন রাতে বাড়ির মেয়েদের জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হত। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে অত্যাচার করা হত। অভিযোগের আঙুল শিবু হাজরা ও তাঁর সঙ্গীদের দিকে।

সন্দেশখালি নিয়ে সমাধান খুঁজতে ১০ সদস্যর এক উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার সকাল থেকে ডিআইজি পদমর্যাদার মহিলা পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে তৈরি ওই কমিটি ঘুরেছে সন্দেশখালির পাড়ায় পড়ায়। সন্দেশখালি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন খোদ রাজ্যপাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × five =