নিম্নচাপে পরিণত হল ঘূর্ণাবর্ত, বুধেই প্রবল শক্তি নিয়ে তাণ্ডব চালাবে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’

নিম্নচাপে পরিণত হল ঘূর্ণাবর্ত, বুধেই প্রবল শক্তি নিয়ে তাণ্ডব চালাবে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’

 নয়াদিল্লি: প্যাচপ্যাচে আর ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল রাজ্যবাসী৷ ফ্যান-এসি ছাড়া এক মিনিটও থাকা দায়৷ রাস্তায় বেরলেই ঘেমেনেয়ে একাকার কাণ্ড৷ কবে নামবে স্বস্তির বৃষ্টি? একটাই প্রশ্ন সকলের মনে৷ কিন্তু, বৃষ্টি নিয়ে কোনও আশার কথা শোনাতে পারেনি আলিপুর আবহাওয়া দফতর৷ উল্টে বর্ষাকে ব্যাকফুটে ঠেলে মিলল ‘বিপর্যয়’-এর ইঙ্গিত৷  সোমবারই আরব সাগরে তৈরি হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। মঙ্গলবার সকালে সেই ঘূর্ণাবর্তই শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, মৌসুমী বায়ুর মেঘমণ্ডলী এই নিম্নচাপের টানেই ভারতীয় উপকূল থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে। বিলম্বিত হচ্ছে বর্ষার আগমনের পথ৷  

মৌসম ভবন জানাচ্ছে, বর্তমানে এই নিম্নচাপটি দক্ষিণপূর্ব আরব সাগরে অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে৷ নাম হবে ‘বিপর্যয়’৷ এই নামটি দিয়েছে বাংলাদেশ৷ আপাতত এই নিম্নচাপটি রয়েছে গোয়া থেকে ৯২০ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম, মুম্বই থেকে ১১২০ পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে এবং গুজরাটের পোরবন্দর থেকে ১১৬০ দক্ষিণে৷ মনে করা হচ্ছে উত্তর অভিমুখে এগিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে৷  

এদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে আজ থেকেই লাক্ষাদ্বীপের উপর ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। দমকা হাওয়ার বেগ সর্বোচ্চ হতে পারে ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার৷   তবে ‘বিপর্যয়’-এর গতিপথ নিয়ে এখনইও নিশ্চিত ভাবে কিছু জানায়নি মৌসম ভবন। স্কাইমেটের রিপোর্ট বলছে, বেশ কিছু মডেলে দেখা গিয়েছে আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ভারতের পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে উত্তর দিকে অগ্রসর হবে৷ আবার কিছু মডেল দেখাচ্ছে এটি উত্তর দিকে এগোতে এগোতে বাঁদিকে বাঁক নেবে এবং ওমানের দিকে চলে যাবে৷ ফলে এই  ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল কোথায় হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়৷

তবে এর ফলে আরব সাগরেই বন্দি থাকবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। সেই আবহেই বাংলায় বর্ষা পৌঁছতে অনেকটা দেরি হয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা।  গরম থেকেও নিস্তার পাবে না বাংলা৷ এখনও পর্যন্ত কেরলেই পৌঁছতে পারেনি বর্ষা। পরিস্থিতি অনুকূল হতে আরও অন্তত ১-২ দিন লেগে যাবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।

ঘূর্ণাবর্তের জেরে ৮ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রের উপকূলে সমুদ্র উত্তাল থাকবে৷ কেরল থেকে মহারাষ্ট্র পর্যন্ত উপকূলবর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও এই সময়ের মধ্যে দক্ষিণ কর্ণাটকের অভ্যন্তরীণ এলাকাগুলিতেও বৃষ্টি হতে পারে৷ ৯ থেকে ১২ জুন ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বৃষ্টি হবে গুজরাটের উপকূলীয় অঞ্চলে৷