কলকাতা: উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য৷ এবার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করলেন মেধাতালিকায় থাকা ১২৩ জন মামলাকারী৷ আগামী ৪ জানুয়ারি মামলার শুনানি বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে৷
উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে বহু মামলা বিচারাধীন ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলাগুলি শুনানিতে ২০১৯ সালে পয়লা অক্টোবর বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে স্বচ্ছ এবং পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ এবং মেধাতালিকা প্রকাশ করার পর যদি কোন চাকরি প্রার্থী, সেই মেধা তালিকায় কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে তারা লিখিতভাবে রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে অভিযোগ জানাতে পারে৷ সেই নির্দেশ মোতাবেক রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন ৪ অক্টোবর ২০১৯ সালে তারা মেধাতালিকা প্রকাশ করে৷ পরবর্তী মামলার শুনানিতে বহু সংখ্যা মামলাকারী, যারা শুধুমাত্র ভেরিফিকেশনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি বলে মামলা করেছিলেন, তারা ওই মামলা চলাকালীন ভেরিফিকারে সুযোগ পেয়ে যান৷ ফলে তাদের করা মামলাগুলি সেই সময়ের জন্য গুরুত্বহীন হয়ে পরে৷
পরবর্তী সময় রাজ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন যে পূর্ণাঙ্গ মেধাতালিকা প্রকাশ করেছিল সেই তালিকাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছিলেন৷ অন্যান্য মামলাগুলির সঙ্গে কোনও তার সম্পর্ক ছিল না৷ মামলাকারী মৌমিতা ঘোষ সহ ১২৩ জনের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, যেহেতু আবেদনকারীরা মেধাতালিকা আছেন, কিন্তু শুনানিতে অংশ গ্রহণের সুযোগ পাইনি, তাই তাদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে৷ কারণ তাঁদের কোন বক্তব্য আদালত শোনেননি৷ তাদের আরও বক্তব্য, অকৃতকার্য প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর, সেই প্রক্রিয়ার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করার আইনি এক্তিয়ার নেই তাদের৷
আশীষ বাবুর বক্তব্য, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল না করে প্রার্থী তালিকা পুনরায় সংশোধন বা পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া হোক৷ কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হওয়ার কারণে তৈরি হয়েছে নতুন করে জটিলতা। মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আরও জানিয়েছেন, বারবার পরীক্ষা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েও চাকরিপ্রার্থীদের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। যেখানে ১ লক্ষ ৯৬ হাজার চাকুরী প্রার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছিল। পরীক্ষার্থীরা বলছে, একদিকে যখন সিঙ্গেল বেঞ্চ রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, আবার সেই সিঙ্গেল বেঞ্চ স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপরে ভরসা রাখায় দোলাচলে রাজ্যের উচ্চ প্রাথমিকে ১ লক্ষ ৯৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৪ জানুয়ারি এই মামলার বিচার পর্ব শুরু হতে পারে৷ ওই মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় খারিজ হয় কি না কিংবা আগের নির্দেশ বহাল রাখা হয় নাকি, তা ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের উপর নির্ভর করছে৷ ফলে নতুন করে মামলা দায়ের হওয়ার ঘটনায় গোটা প্রক্রিয়াটি আরও একবার স্তিমিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷ আদালতের নির্দেশের উপর নির্ভর করছে উচ্চ প্রাথমিকে পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া৷