কলকাতা: আমতার ছাত্রনেতা আনিস খান হত্যা মামলায় উত্তাল রাজ্য৷ চলছে ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় অবশেষে গ্রেফতার দুই পুলিশ কর্মী৷ এদিন নবান্ন থেকে আনিস হত্যাকাণ্ডে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তুলোধোনা করলেন সিবপিএম বিজেপি’কে৷ অশান্তির জন্য কাঠগড়ায় তুললেন সংবাদমাধ্যমকে৷
আরও পড়ুন- ১৫ দিনে সব তথ্য বেরোবে, বলল পুলিশ! সিটের কাজে বাধার অভিযোগ
এদিন আনিস-কাণ্ডে মমতা বলেন, ‘‘আইন আইনের মতো চলবে৷ তদন্ত নিজের পথে এগোবে৷ আমি কোনও নিরপক্ষ তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে চাই না৷’’ তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় পুলিশের নামে অভিযোগ উঠেছে, তাই তার ভিত্তিতেই দু’জন পুলিশকর্মীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সরকার এসব ক্ষেত্রে ভীষণই কঠিন৷ কোনও অবিচার হলে বা কোনও অভিযোগ সত্যি হলে পদক্ষেপ করা হবেই৷ কিন্তু অভিযোগ মিথ্যে হলে আন্দোলনকারীদেরও বোঝা উচিত বাধা উৎপন্ন করাটা ক্রিমিনাল অফেন্স৷
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘আমি নিজেও আন্দোলন করে বড় হয়েছি৷ আমাকে যেন কেউ আন্দোলন না শেখায়৷ রাজনৈতিক কারণে অতিরিক্ত আন্দোলন করা হচ্ছে৷ গতকাল কলকাতার মানুষকে অত্যন্ত সমস্যায় পড়তে হয়েছে৷ আন্দোলন করার অধিকার সবার আছে৷ তা হবে রাস্তা অবরোধ করা হবে কেন? এতে বহু মানুষের বহু ক্ষতি হয়ে গিয়েছে৷ বাংলা এই সংস্কৃতি আর সহ্য করবে না৷ ৩০ বছর ধরে এই সংস্কৃতি দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি৷ আর নয়৷’’
এই ঘটনার জন্য কিছু সংবাদমাধ্যমকেও কাঠগড়ায় তোলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, কিছু সংবাদমাধ্যম বিশৃঙ্খলাটাকে বেশি উৎসাহিত করে টিআরপি বাড়ানোর জন্যে৷ সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিতেও তারা পিছুপা হয় না৷ মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি, ‘আইনকে আইনের কাজ করতে দিন৷ এখানে ব্যবসা করবেন, অথচ বিশৃঙ্খলাকে উৎসাহিত করবেন, এটা হতে পারে না৷ বিজেপি হলে চ্যানেল বন্ধ করে দিত৷ আমরা তা করি না৷ কিন্তু তাবলে বাংলাকে কামড়াতে আঁচড়াতে দেব না৷’
তাঁর সাফ কথা, আমি এখানে সিপিএম বা বিজেপি’র স্বার্থ দেখার জন্যে আসিনি৷ মানুষের স্বার্থ দেখার জন্য এসেছি৷ কর্মসংস্থান তৈরির জন্যে এসেছি৷ টিআরপি বাড়ানোর জন্য যদি কেউ আগুন জ্বালাতে চান, তাহলে তা বরদাস্ত করা হবে না৷ আইন সকলের জন্য সমান৷ সকলের স্বার্থ দেখতে হবে৷ যাঁরা বিজ্ঞাপন দেন সেই ব্যবসায়ীদের স্বার্থও দেখতে হবে৷ আপনারা ক’জন করে খারেন, তাহলেই কি হবে? অন্যায় হলে শান্তি পাবে৷
আনিস হত্যার প্রতিবাদে পথে নামে সিপিএম-কেও একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, সিপিএম কোনও দিন দেখাতে পারবে লক্ষণ শেঠ গ্রেফতার হয়েছেন৷ নাকি তাপসী মালিক হত্যার পর কেউ গ্রেফতার হয়েছে৷ রবীন্দ্রনাথের নোবেল আজও উদ্ধার হয়নি৷ কেস তো সিবিআই-এর কাছে৷ উল্টে শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয়বাহিনীর নাম করে ৪ জনকে মেরে ফেলা হয়েছে৷ নিজেরা ক্ষমতায় নেই বলে সিবিআই-দাবি করে রাজ্য পুলিশকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে৷ এক লক্ষের মধ্যে ১০ জন ভুল করতে পারে৷ ১০ জনই শাস্তি পাবে৷ তার মানে ১ লক্ষই ভুল নয়৷ আনিসকাণ্ডে নিরপেক্ষ তদন্ত হবে৷ সঠিক বিচার করবে পুলিশ৷ নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>