ধনী-দরিদ্রে বিভক্ত ভারত, মেক ইন ইন্ডিয়া অসম্ভব, সংসদে ঝড় রাহুলের

ধনী-দরিদ্রে বিভক্ত ভারত, মেক ইন ইন্ডিয়া অসম্ভব, সংসদে ঝড় রাহুলের

নয়াদিল্লি:  লোকসভায় ঝড় তুললেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী৷ তুলোধোনা করলেন মোদী সরকারকে৷ রাহুলের মন্তব্যে তুমুল হইচই সংসদে৷ 

আরও পড়ুন- ক্রমশ লাগামছাড়া দৈনিক মৃত্যু! দেশে সংক্রমণ ১০%-এর নীচে

এদিন বক্তব্যের শুরুতেই রাহুল বলেন, এখন আর এক এবং অদ্বিতীয় ভারত নেই৷ এখানে দুটো ভারত আছে৷ একটা ধনীর একটা গরিবের৷ একাংশের হাতে বিপুল অর্থ আর ক্ষমতা রয়েছে৷ আর একাংশের হাতে অর্থ নেই৷ আর এই দুই অংশের মধ্যে দূরত্ব ও বৈষম্য ক্রমশ প্রকট হচ্ছে৷ গরিব ভারতের কাছে রোজগার নেই৷ রাষ্ট্রপতির ভাষণে বেকারত্ব নিয়ে একটা শব্দও খরচ করা হয়নি৷ গোটা ভারতের যুব সমাজ আজ কাজের খোঁজে৷ তাঁরা একটাই কথা বলছে, আমাদের কাজ চাই৷ আপনার সরকার সেটা দিতে পারছে না৷ রাহুল তথ্য তুলে বলেন, গত বছর ৩ কোটি মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছেন৷ গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেকারত্ব রয়েছে আজ ভারতে৷ 

কেন্দ্রের সরকারকে একহাত নিয়ে রাহুল বলেন, আপানারা মেক ইন ইন্ডিয়া, স্টার্ট আফ ইন্ডিয়ার কথা বলছেন৷ অর্থচ যুব সমাজ কর্মহীন৷ যেটা ছিল, সেটাও হারিয়ে গিয়েছে৷ এই সত্যটা সরকারও জানে৷ তাই কত কর্ম সংস্থান তৈরি করা হয়েছে সে কথা একবারও উল্লেখ করেনি সরকার৷ আপনারা সেটা বলতেও পারবেন না৷ তাহলে ভারতের যুব সমাজ বলবে, আপনারা মজা করছেন৷  

কিন্তু কী ভাবে দুটো ভারত তৈরি হল? রাহুলের যুক্তি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং অসংগঠিত ক্ষেত্র থেকে লক্ষ কোটি টাকা ছিনিয়ে ভারতের সবচেয়ে বড় উদ্যোগপতিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ ত ৭ বছরে অসংগঠিত ক্ষেত্র ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের উপর একের পর এক আক্রমণ এসেছে৷ নোট বন্দি, ভুল জিএসটির পর করোনা কালে যখন সবচেয়ে বেশি সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন ছিল, তখন তা দেওয়া হয়নি৷ দেশে ৮৪ শতাংশ লোকের ক্রয় ক্ষমতা কমে গিয়েছে৷ 

তিনি বলেন, আমরা সরকার ১০ বছরে ২৭ কোটি মানুষকে দারিদ্রসীমার বাইরে নিয়ে এসেছিলাম৷ বিজেপি সরকার ২৩ কোটি মানুষকে দারিদ্রসীমার নীচে ঠেলে দিয়েছে৷
আদানির হাতে ভারতের সমস্ত বন্দর, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ, ট্রান্সমিশন, খনি, গ্রিন এনার্জি, গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন, ভোজ্য তেল সব কিছু তুলে দেওয়া হয়েছে৷ অন্যদিকে, আম্বানিদের হাতে রয়েছে পেট্রোক্যামিকেলস, টেলিকম, রিটেল, ই-কমার্স৷ নির্দিষ্ট কিছু লোকের হাতেই দেশের সমস্ত অর্থ চলে যাচ্ছে৷ অসংগঠিত ক্ষেত্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে৷ সুর চড়িয়ে রাহুল বলেন, মেড ইন্ডিয়ার কথা বললেও, মেড ইন্ডিয়া হওয়া সম্ভব নয়৷ মেড ইন্ডিয়ার জন্য এমএসএমই সেক্টরকে শক্তিশালী করতে হয়৷ অথচ ছোট শিল্পকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে৷  দেশের ১০০ জনের হাতে ৫৫ শতাংশ সম্পত্তি চলে গিয়েছে৷ 

আলোচনা আর সমঝোতার মধ্যে দিয়েই শাসন করা যায়৷ জোড় করে কারও উপর কর্তৃত্ব ফলানো যায় না৷ আপানারা কারও কথা শোনেন না৷ পেগাসাসে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের চেষ্টা হয়েছে৷  বক্তব্যের শেষে তুলোধোনা করেন আরএসএস-কে৷ রাহুল বলেন, আরএসএস আমাদের আমাদের দেশকে দুর্বল করছে৷ দেশের সংস্কৃতি, ভাষাকে দুর্বল করছে৷ 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − six =