কলকাতা: ৪০ পেরলেই শরীরে বাসা বাঁধে নানা রোগ৷ অনেক সময় অজান্তেই তা আমাদের গ্রাস করতে থাকে৷ তবে শুধু বয়স বাড়লেই যে রোগের প্রকোপ বাড়ে, তেমনটা আজকাল আর কেউ দাবি করতে পারে না৷ কারণ খুদেরাও নানা সমস্যার জর্জরিত৷ একটি সমীক্ষা থেকে উঠে চমকে দেওয়ার মতো কিছু তথ্য৷
আরও পড়ুন- ক্যানসার আক্রান্ত সোমার পাশে দাঁড়াতে আহ্বান বিচারপতির, রাজ্যকে মানবিক হওয়ার পরামর্শ
সম্প্রতি শিয়ালদহ স্টেশনে টানা এক সপ্তাহ একটি মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল৷ সেখানে প্রায় ৩৫ হাজার নিত্যযাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়৷ আর তাতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেলেন রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের ডি এন দে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা৷ দেখা গিয়েছে নানা রকম ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন ৯০ শতাংশ নিত্যযাত্রী৷ ৪৫ ঊর্ধ্ব নিত্যযাত্রীদের অর্ধেকের বেশি সুগার ও ব্লাডপ্রেসারে জোড়া ফলায় আক্রান্ত৷ নানা রকম ত্বকের সমস্যাও রয়েছে অর্ধেক নিত্যযাত্রীর৷ এই সকল নিত্যযাত্রীদের বাড়ির খুদে পড়ুয়ারা স্কুলে টিফিনে অধিকাংশ সময়েই কেক, নুডলস বা নানাবিধ ফাস্ট ফুড নিয়ে যাচ্ছে৷ ফলে ধীরে ধীরে তাদের খিদে কমছে৷ দেখা দিচ্ছে পেটে ব্যথা, বমির মতো উপসর্গ৷
চলতি মাসের ১১ তারিখ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত শিয়ালদা স্টেশনের উত্তর ও দক্ষিণ শাখায় এই স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত চলত দুটি ক্যাম্প৷ স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়ে নিত্যযাত্রীদের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। দুটি ক্যাম্প মিলেয়ে দৈনিক প্রায় ৫ হাজার নিত্যযাত্রী চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে আসতেন৷ শিক্ষক চিকিৎসক, পিজিটি, ইনটার্ন মিলিয়ে ১৫ জন চিকিৎসক এই স্বাস্থ্য শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন।
ক্যাম্পের পর পরিস্থিতি কেমন বুঝলেন? ব্যাখ্যা দিলেন ক্যাম্পের ইনচার্জ ডি এন দে’র কমিউনিটি মেডিসিনের প্রধান ডাঃ অভিজিৎ দে৷ তাঁর দেওয়া হিসেব বলছে –
১) ৪৫ ঊর্ধ্বদের মধ্যে মেধুমেয় রোগে আক্রান্ত ৭০ শতাংশ। উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসারে ভুগছেন ৫০ শতাংশের বেশি।
২) ৪৫ এর নীচে থাকা নিত্যযাত্রীদের মধ্যে সুগারের প্রকোপ সে ভাবে লক্ষ্য করা না গেলও, প্রতি ৪ জনে ১ জনের হাইপ্রেসার রয়েছে।
এর পাশাপাশি যে সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি জাঁকিয়ে বসেছে, সেটা হল ব্যথা৷ বিশিষ্ট ব্যথা বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুব্রত গোস্বামীর কথায়, এখন প্রতি পরিবারে অন্তত একজন ব্যথায় কাবু। গত দুই বছর করোনা পরিস্থিতি এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তাঁর দাওয়াই, সুষম খাদ্যগ্রহণের পাশাপাশি সকালে অন্তত ১৫-২০ মিনিট হাঁটা বা খালি হাতের ব্যায়াম অত্যন্ত জরুরি৷ কায়িক পরিশ্রমেও এই সমস্যা অনেকটাই কাটবে। এই ক্যাম্পের পর শিয়ালদহের ডিআরএম শীলেন্দ্রকুমার সিং বলেন, রাজ্যের ডি এন দে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই৷ আমরা সর্বতোভাবে তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>