লক্ষ্যভ্রষ্ট বিরোধী শিবির! মোদী ক্যারিশ্মায় ফের পদ্ম ফুটল গুজরাতে

লক্ষ্যভ্রষ্ট বিরোধী শিবির! মোদী ক্যারিশ্মায় ফের পদ্ম ফুটল গুজরাতে

আমেদাবাদ: পুরনো হিসেব নিকেষ বদলে গুজরাতে বিপুল ভোটে জিতে আরও একবার ক্ষমতা দখলের পথে বিজেপি৷ নেপথ্য কুশীলব অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর সেনাপতি অমিত শাহ৷ মোদী-শাহের রণকৌশলেই নির্বাচনী প্রচারেই ঝড় তুলেছিল গেরুয়া শিবির৷ ২০০২ সালে রেকর্ড ভোটে জিতে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মোদী৷ সে বার বিজেপি জিতেছিল ১২৭টি আসনে৷ সেই সংখ্যাকে বহু পিছনে ফেলে দিল ২০২২৷ নির্বাচনের মুখ ছিলেন একমাত্র ভূমিপুত্র  নরেন্দ্র মোদী৷  

আরও পড়ুন- হিমাচলে এগিয়েও নেই স্বস্তি, জয়ী বিধায়কদের লুকাতে রিসর্ট খুঁজছে কংগ্রেস

গুজরাতের নির্বাচনের সঙ্গে একুশের নির্বাচনের একটি তাৎপর্যপূর্ণ মিল রয়েছে৷ বাংলার বিধানসভা ভোটে কার্যত একই ভাবে একার কাঁধে দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ভাঙা পায়েই প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন তিনি৷ মোদীর মতো বাংলাতে তিনিই ছিলেন তৃণমূলের একমাত্র মুখ৷ তাঁকে অবশ্য যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আর বাংলা বিধানসভা ভোটে রাজনীতির ময়দানে পারদ চড়িয়েছিল তৃণমূলের‘খেলা হবে’ স্লোগান৷ তেমনই গুজরাতে ভোটের উষ্ণতা বাড়িয়ে মোদী স্লেগান দিয়েছিলেন, ‘এ গুজরাত ম্যায় বানাভিউ ছে’৷ অর্থাৎ আমি এই গুজরাত বানিয়েছি৷ 

বাংলা দখলে খামতি রাখেনি বিজেপি’ও৷ তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে তাদের হাতেও কম ধারালো অস্ত্র ছিল না৷ কর্মসংস্থা, বেকারত্বের মতো ইস্যু, বারবার বাংলাকে বিদ্ধ করেছে৷ উঠেছে কাটমানির প্রসঙ্গ৷ গরু, পাচার, কয়লা পাচারের বারবার বিদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে শাসক শিবিরকে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত মমতাতেই আস্থা রেখেছে বাংলার মানুষ৷ ভোট দিয়েছে তাঁর উন্নয়নকে সামনে রেখে৷ সেখানে ফিকে পড়েছে মোদী ক্যারিশ্মা৷

একই ভাবে গুজরাতেও একাধিক সমস্যা রয়েছে৷  বিরোধীদের তূণেও ছিল একাধিক বাণ৷ কিন্তু কোনওটাই লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি৷ গুজরাটের মোরবি সেতু বিপর্যয়ের স্মৃতি এখনও টাটকা৷ মাচ্ছু নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। বিধানসভা ভোটের এই দুর্ঘটনা নিশ্চিতভাবেই ছিল বিজেপির মাথাব্যথার কারণ৷ কিন্তু, বৃহস্পতিবার বিধানসভা ভোটের ফলে তার কোনও ছাপই পড়ল না৷ বরং মাস দুয়েক আগে সংবাদ শিরোনামে উঠে আসা মোরবি-ই গুজরাতে বিজেপিকে লিড দিল৷ 

ফের ফিরে আসা যাক বাংলার প্রসঙ্গে৷ গত বিধানসভা ভোটে সবুজ ঝড়ে ধরাশায়ী হয়েছিল বামেরা৷ গুজরাতেও দমবন্ধ অবস্থা বিরোধী কংগ্রেসের৷ এ রাজ্যে বামেরা খাতা খুলতে না পারলেও কংগ্রেস অবশ্য খাতা খুলেছে৷ কিন্তু তাদের ভোট কেটেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ৷ মোদী-শাহের গুজরাতে দ্বিতীয়বার লড়াই করতে নেমেই চমক দিল আম আদমি পার্টি৷ খাতা খোলার পাশাপাশি প্রায়  ১২ শতাংশ ভোট গেল তাদের ঝুলিতে৷ ২০১৭ সালে ২৯টি আসনে লড়েছিল আপ, সবকটিতেই জামানত জব্দ হয়েছিল৷ পাঁচ বছর পর মোদী রাজ্যে অনেকটাই শক্ত মাটিতে কেজরির দল৷